ভূমিখেকোচক্রের কবলে বিলীন কুলাউড়ার লক্ষ্মীপুর চা বাগান
- কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা
- ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
- চা বাগানের মালিক জেলা প্রশাসক
- বাগান সরকারি কি না জানে না ভূমি অফিস
- জাল দলিল তৈরি করে বাগানের জমি দখল
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার উপজেলার ৯৫ একর জায়গাজুড়ে থাকা লক্ষ্মীপুর চা বাগান এখন অস্থিত্বহীন। ভূমিখেকো ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা গিলে খেয়েছে প্রায় পুরো বাগান।
ভূমি দখলকারীদের কবল থেকে বিলুপ্তপ্রায় চা বাগানটিকে উদ্ধার ও চা শ্রমিকদের পূনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন বাগানে বসবাসকারী সাবেক চা-শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা। তারা সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন।
আবেদনপত্র থেকে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর চা বাগানের জায়গা ৪ ও ৫ নং খতিয়ানভুক্ত জমি। প্রায় ৯৫ একর আয়তনবিশিষ্ট চা বাগানের মালিক ছিলেন পৃথিমপাশার জমিদার। জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর বাগানটি ৪ নং খতিয়ানভুক্ত এবং লক্ষ্মীপুর টি গার্ডেন নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। মূলত জেলা প্রশাসক চা বাগানের মালিক। কিন্তু ৯৫ একরের চা বাগানটির মধ্যে প্রায় ৪০ একর চা বাগানের জায়গা স্থানীয় কতিপয় ভূমিখেকোচক্র সর্বশেষ ভূমি জরিপের সময় জাল দলিল তৈরি করে তাদের নামে রেকর্ডভুক্ত করে নেয়। ফলে চা বাগানের বাংলো, কোয়ার্টার, কুলিবস্তি, রাস্তা ইত্যাদি রেকর্ডে থাকলেও কয়েকজন ব্যক্তির দখলে রয়েছে বাগানের ৪০ একর জায়গা-জমি।
বাকি জায়গায় এখনো কোনো ঘরবাড়ি তৈরি না হলেও কতিপয় ভূমিখেকোচক্র বাগানের খালি ও পতিত জায়গাগুলোও তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। অথচ বাগান পরিচালনায় যারা অতীতে দায়িত্বরত ছিলেন, তাদের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ২৪ শতাংশ জায়গা।
বর্তমানে শ্রমিক পরিবারের শতাধিক সদস্য বিলুপ্তপ্রায় চা বাগানের কোয়ার্টারে বসবাস করলেও বাগানের রাস্তা দিয়ে চলাচলে তাদেরকে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাগানের সাবেক স্টাফরা।
এ বিষয়ে কথা হয় চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সদস্য চিনু মিয়া, রেহানা বেগম, রাবিয়া বেগম, শওকত মিয়া, রজনী কেচুয়া, জষ্টিনা চমগ, এন্ডভেন্ডেল, মমতা বেগম, রহিমা বেগম, প্রদীপ রুরামের সাথে। তারা বলেন, লক্ষ্মীপুর টি গার্ডেনের প্রায় ৯৫ একর চা বাগানের জমিতে বাগানের স্টাফ ছিলেন আমজাদ আলী এবং তার স্ত্রী বাগানের শ্রমিক ছিলেন। তাদের এ বাগানেই জন্ম, এ বাগানেই বেড়ে ওঠা।
নব্বইর দশকে কালিটি চা বাগানের সুরুলু কালোয়ার, নিরঞ্জন কালোয়ার গংরা জাল দলিল সৃষ্টি করে ওই চা বাগানের জমি দখল করে এবং আগের রোপিত চা গাছ কেটে ফসলাদি আবাদ করছেন। এ ব্যাপারে নিরঞ্জন কালোয়ার জানান, তার বাবা সুরুলু কালোয়ার জমিগুলি ক্রয়সূত্রে মালিক। চলতি সেটেলমেন্ট জরিপে তাদের নামে রেকর্ডভুক্তও আছে। জাল দলিল সৃষ্টি করে বাগানের জায়গা দখলের অভিযোগটি সত্য নয়। তারা জমির বৈধ মালিক।
কুলাউড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন জানান, জায়গাটি যদি সরকারি হয় এবং সেটেলমেন্ট যদি কারো নামে সেই জামি রেকর্ড করে দিয়ে থাকেন তাহলে তা বাতিল হবে। আমি উভয়পক্ষকে ডেকে কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা