কালের সাক্ষী ২৫০ বছরের পুরনো গোল মসজিদ
- জাহাঙ্গীর আলম হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ)
- ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৩
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে আজো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ২৫০ বছরের পুরনো দৃষ্টিনন্দন ঐতিহাসিক গোল মসজিদ। কয়েক দফায় পুনঃ সংস্কারের ফলে এটি উপজেলার পাঁচ নম্বর শাহেদল ইউনিয়নের বাগপাড়া গ্রামে নতুন রূপে মোঘল আমলের স্মৃতি বহন করে চলেছে। অজ পাড়াগাঁয়ে স্থাপিত ঐতিহাসিক গোল মসজিদটি সে সময়ে হোসেনপুর উপজেলাসহ আশপাশের এলাকায় মুসলমানদের ধর্ম প্রচারের একমাত্র ধারক ও বাহক হিসেবে ব্যবহার হতো বলে জনশ্রƒতি রয়েছে।
মসজিদ প্রাঙ্গণে স্থাপিত শিলালিপি ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, হোসেনপুরের গোল মসজিদটি মোগল আমলের নজরকাড়া স্থাপত্য শিল্পে নির্মিত হয়েছিল। পরবর্তীতে হিজরী ১২২৯ সালের দিকে এটি প্রথম পুনর্নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় ইতিহাসবিদদের ভাষ্যমতে, সুদূর ইরাক থেকে ভারতবর্ষের পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ পূর্ব বাংলায় মুসলিম ধর্ম যাজক শেখ মুহাম্মদ শামছুদ্দিন ধর্ম প্রচারে কিশোরগঞ্জের অন্তর্গত হোসেনশাহী পরগনার আওতাধীন বর্তমানে হোসেনপুরের শাহেদল বাগপাড়া গ্রামে বসতি স্থাপন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তৎপরবর্তীতে শেখ মুহাম্মদ শামছুদ্দিনের দুই ছেলে শেখ আদম ও শেখ আলম বাগপাড়া এলাকায় মসজিদটির নির্মাণ কাজ সুসম্পন্ন করেন। এ স্থাপনা দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদটির দেয়াল তিন ফুট প্রস্থ। ওপরের ছাদের অংশ সম্পূর্ণ গোলাকার। চুন, ইট ও আখের লালির সংমিশ্রণে দেয়ালের গাঁথুনি। মসজিদের আয়তন দৃশ্যত কম হলেও ইমামসহ তিন কাতারে ১৫-১৮ জন মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন।
স্থানীয় প্রবীণ মুসল্লিরা জানান, ঐতিহাসিক এ মসজিদের বয়স আনুমানিক ২৫০ বছরেরও বেশি হবে। শাহেদল ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ উদ্দিন ও কবি মাজহারুল ইসলাম জানান, মসজিদটিতে স্থানীয় মুসল্লিদের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে কিছুটা সম্প্রসারণ ও ভেতরে টাইলস এবং রঙ করে পূণরায় সংস্কার করা হয়েছে।
স্থানীয় ইতিহাসবিদ হোসেনপুর মহিলা ডিগ্রি (অনার্স) কলেজের বিভাগীয় ইতিহাস প্রধান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হাকিম জানান, মাস্টার্সে অধ্যয়নকালে আশির দশকের শেষ দিকে মসজিদটি পরিদর্শন করেছিলেন। পরবর্তীতে কর্মজীবনে বহুবার পরিদর্শন করে মসজিদটির তাৎপর্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এখনো সচেষ্ট রয়েছেন। বর্তমান প্রজন্মের কাছে ব্যাপকভাবে তুলে ধরতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সাবেক হোসেনপুর পৌর মেয়র মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানান, সম্প্রতি নতুন করে সংস্কারের ফলে ঐতিহাসিক এ গোল মসজিদটি কিছুটা হলেও নতুনত্ব পেয়েছে। যা তরুণ প্রজন্মের গবেষণা কাজেও সহায়ক হবে।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মবিন জানান, ঐতিহাসিক এ গোল মসজিদটি সরাসরি দেশের প্রতœতাত্ত্বিক বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত জরুরী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা