২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে কলাপাড়ার পৌর জলাধার

ব্যক্তিমালিকানার পুকুরও ভরাট চলছে
-

নাগরিক সচেতনতার অভাবসহ সংশ্লিষ্টদের অপরিণামদর্শিতা-উদাসীনতার কারণে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভার জলাধারগুলো। সেই সাথে জলাধারগুলো ভরাটের চলছে মহোৎসব। এর খেসারত দিচ্ছে নগরবাসী। এ পরিস্থিতিতে নগরে বাড়ছে অগ্নিনির্বাপণ ঝুঁকির আশঙ্কা। গত দেড় যুগে এখানে অন্তত চার হাজার পুকুর ভরাট করা হয়েছে। অর্থনৈতিভাবে লাভবান হওয়ার স্বার্থে ব্যক্তিমালিকানার পুকুরগুলোও ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
পটুয়াখালী-বরগুনা মৎস্য চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্প পরিচালিত ১৯৯৮ সালের এক জরিপের তথ্যমতে কলাপাড়া পুরো উপজেলায় মোট পুকুরের সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ১৩৪টি। এর মধ্যে বড় পুকুর (এক হাজার বর্গমিটারের বেশি) ছিল এক হাজার ৫৬৪টি। মাঝারি পুকুর ছিল ১০ হাজার ৫৪টি। ছোট পুকুর ছিল পাঁচ হাজার ২৭৮টি এবং ডোবা ছিল ২৩৮টি। এ ছাড়া, খাস পুকুর ছিল ১০৮টি। কিন্তু বর্তমানে অর্ধেক পুকুরও অবশিষ্ট নেই। এ ছাড়া, কলাপাড়া পৌরশহরে পুকুরের সংখ্যা ছিল ৬৪০টি। এর মধ্যে পৌরসভায় সরকারি হিসাবে ২৪টি খাস পুকুর রয়েছে। তার অর্ধেক এখন ভরাট।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞের মতে পৌর এলাকায় ব্যক্তিগতভাবে পুকুর খনন কিংবা ভরাটের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়া পৌরবাসীর সংখ্যা অনুপাতে কতটি পুকুর থাকা দরকার সেটি সংরক্ষণের দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ সেটি পালন করছেন কিনা সেটিই এখন প্রশ্ন।
এ দিকে পৌরসভার ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে একটি খাল। ‘চিংগরিয়া খাল’ নামে পরিচিত এ খালটি খেপুপাড়া মৌজায় আন্ধারমানিক নদী হতে উৎপন্ন হয়ে পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড থেকে ৭ নং ওয়ার্ডের অংশ বিশেষের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রায় চার কিলোমিটার পথ অতিক্রম শেষে একই মৌজার চাকামইয়া-নিশানবাড়িয়া নদীর (দোন) সাথে মিশেছে। খালটি পৌরসভার ভেতরে প্রবাহিত একমাত্র খাল। পাঁচ হাজার পৌরবাসীর কাছে এ খালের গুরুত্ব অপরিসীম। খালের ভূমি রেকর্ড সংশোধন ও শ্রেণী পরিবর্তন এবং বেআইনিভাবে প্রদানকৃত বন্দোবস্ত বাতিলসহ খালটি যথাযথ সংরক্ষণে ‘বেলা’ একটি মামলা দায়ের করেছে।
কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টোন অফিসার ইলিয়াস হোসেন বলেন, পৌর শহরে পুকুর, খাল যাতে কেউ ভরাট ও ময়লা আবর্জনা ফেলে দুষিত করতে না পারে এ জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসনসহ সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। প্রয়োজনের সময় অগ্নিনির্বাপণে পানির জোগান পাওয়ার দরকার আছে।
কলাপাড়া পৌরসভার প্রশাসক ও নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, পৌরসভার খালগুলো যাতে দখল না হয়, ময়রা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত না হয় সে ব্যাপারে সবার সচেতনা প্রয়োজন।

 


আরো সংবাদ



premium cement