কলাপাড়ায় নিম্নবিত্তদের জন্য স্বল্প মূল্যের ‘কৃষক বাজার’
- কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
- ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৬
পটুয়াখালীতে প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য মধ্যস্বত্বভোগী ও খাজনা ব্যতিত সরাসরি ক্রেতাদের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রির জন্য স্থাপন করা হয়েছে স্বল্পমূল্যের ‘কৃষক বাজার’। গতকাল শনিবার ভোরে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আমরা কালাপাড়াবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় প্রেসক্লাবসংলগ্ন এলাকায় এ বাজারটি বসানো হয়। কাকডাকা ভোরে গ্রাম থেকে কৃষকরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হন এ বাজারে। এর পরপরই ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে ওঠে বাজারটি। উৎপাদিত কৃষিপণ্য সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারায় এবং সেই পণ্য ক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়পক্ষই উচ্ছ্বসিত।
ক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, আগে আমাদেরকে ফড়িয়ার কাছ থেকে বেশি দামে সবজি কিনতে হতো। এখন সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কিনতে পারছি। সে কারণে দাম আনুপাতিক হারে খুবই কম। ক্রেতা জাহানারা বেগম জানান, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। বেশি দামে আমরা নিত্যপণ্য কিনতে পারি না। এতোদিন বাজারে গিয়ে হিমশিম খেয়েছি। এ বাজারে এসে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি। সবজির মানও বেশ ভালো এবং টাটকা।
কৃষক সুলতান গাজী বলেন, আমরা কৃষিপণ্য উৎপাদন করে ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করতাম। ফড়িয়ারা অনেক কমে আমাদের থেকে পণ্য কিনে নিতেন। কিন্তু সেই পণ্য তারা ক্রেতাদের কাছে অনেক বেশি দামে বিক্রি করতেন। এখন ক্রেতারা আমাদের কাছে সরাসরি আসেন। তারা আমাদের কাছ থেকে কম দামে পণ্য কিনতে পারলেও আমরা বরং তাদের কাছে বেশি দামেই বিক্রি করতে পারছি। এ জন্য উপজেলা প্রশাসক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা কলাপাড়াবাসী’র সদস্যদেরকে সাধুবাদ জানাই। এ ন্যায্য মূল্যের সবজি বাজার যেন ভবিষ্যতেও চলমান থাকে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা কলাপাড়াবাসী’র সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে সিন্ডিকেট নামে এক ধরনের চক্র তৈরি হয়েছে। তারা বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। বাজারে গিয়ে সাধারণ ক্রেতারা পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। এসব বিষয় মাথায় রেখে আমরা উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের নিয়ে ‘কৃষক বাজার’ শুরু করেছি। এখানে সবজি বিক্রি করতে কৃষকদেরকে কোনো খাজনা দিতে হয় না। বাজারে কৃষিপণ্য নিয়ে আসতে সেতু পারাপারে তাদেরকে কোনো টোল দিতে হবে না। এ বাজারে পণ্য বিক্রি করে কৃষকরাও যেমন লাভবান হচ্ছেন, ক্রেতারাও ন্যায্যমূল্যে কিনতে পেরে লাভবান হচ্ছেন। এর ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখা হবে বলে আশা করছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, মধ্যবর্তী ও নিম্নআয়ের মানুষদের কথা মাথায় রেখে আমরা ন্যায্য মূল্যের এ ‘কৃষক বাজার’ স্থাপন করেছি। এজন্য পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই লাভবান হবেন। এ বাজার আরো সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা