জীবননগরে গোখাদ্যের সঙ্কটে বিপাকে খামারিরা
- আতিয়ার রহমান জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা)
- ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫
চলতি মওসুমে কয়েক দফায় টানা বৃষ্টিপাতে ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় বিচালির (গোখাদ্য) মূল্য ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে বিচালির তীব্র সঙ্কট, যা একটু মিলছে তার দাম স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় প্রান্তিক খামারিরা পশুখাদ্য সংগ্রহে এবার হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
গত দুই-এক মাস আগেও যেখানে এক ‘কাউন’ বিচালি সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেখানে বর্তমানে এক কাউন বিচালি সাত হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গবাদিপশু নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরা। অনেক খামারি ও কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে কম মূল্যে খামারের গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। অনেক কৃষক বেশি দামে বিচালি কিনতে না পেরে বিকল্প খাদ্য হিসেবে কলাগাছ গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন।
উপজেলার অনেক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক ছোট পরিসরে গরু-ছাগল পালন করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন। আবার অনেকেই গবাদিপশুর ছোট খামার গড়ে তুলেছেন। এসব পশু খাদ্যের জন্য মওসুমে ধান কাটা-মাড়াই শেষে ধানের বিচালি সারা বছরের গোখাদ্য হিসেবে মজুদ করেন কৃষকেরা।
চলতি বছর জুলাই মাসের শেষ থেকে অক্টোবর মাসের শেষ অবধি ভারী বর্ষণের কারণে অনেক ধানক্ষেত পানিতে ডুবে ধান-বিচালি নষ্ট হয়ে গেছে। নিচু জমিতে ধান এখনো পানির নিচে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। অনেক কৃষক তাদের গবাদিপশুর জন্য মজুদকৃত গোখাবার শেষ করে ফেলেছেন। গোখাদ্যের তীব্র সঙ্কটের সুযোগে এক শ্রেণীর মৌসুমি খড় ব্যবসায়ী তাদের মজুুদকৃত খড় বিক্রি করতে শুরু করেছেন এবং বাড়তি মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছেন। কম পুঁজির খামারিরা এসব বিচালি কিনে সামান্য পরিমাণে খাবার দিয়ে গরুগুলোকে কোনো রকমে বাঁচিয়ে রাখছেন। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটি বড় গরুর জন্য প্রতিদিন ৮০-১০০ টাকার খড় লাগে। অন্য দিকে দানাদার খাদ্যের জন্য ব্যয় করতে হয় ৬০-৭০ টাকা।
উপজেলা গোপালনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিচালি সঙ্কটের কারণে প্রয়োজন মতো খাদ্য সরবরাহ করতে না পেরে গরুর শুকিয়ে যাওয়ায় ওজন কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গরু বিক্রি করলেও লোকসান, আবার গরু রেখে দিয়ে খাদ্য সরবরাহ করাও কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলায় হাতেগোনা কিছু খামারির কাঁচা ঘাসের আবাদ থাকলেও অধিকাংশ খামারি ও কৃষক বাজার থেকে চড়া মূল্যে ঘাস কিনে গরুকে খাওয়াচ্ছেন। বাজারে বর্তমানে কাঁচা ঘাসের দামও চড়া। খামারিরা অনেকটা বাধ্য হয়েই চড়া দামে গোখাদ্য কিনছেন।
জীবননগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: সাইফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি অতিবৃষ্টির কারণে নিচু অঞ্চলের ধানক্ষেত পানিতে পচে যাওয়ার ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমন ধান কাটা পুরোপুরি শুরু হলে বিচালির দাম কিছুটা কমে আসবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা