২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লালমনিরহাটে ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহে শিশু-কিশোররা

লালমনিরহাটে ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহে শিশু-কিশোররা -

গ্রামাঞ্চলের শিশু-কিশোররা ঝরেপড়া ও ইঁদুরের গর্তে জমানো ধান সংগ্রহ করে শীতের পোশাক কিনবে। ফলে লালমনিরহাটের বিস্তীর্ণ আমন ফসলের মাঠে ইঁদুরধান সংগ্রহের আনন্দে মেতেছে গ্রামের ভূমিহীন ও হতদরিদ্র পরিবারের শিশু-কিশোররাসহ নারীরাও।
জানা গেছে, লালমিনরহাট জেলা সদর উপজেলাসহ আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় এক লাখ আট হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। পাঁচ উপজেলার বিস্তীর্ণ আমন ফসলের মাঠ থেকে কৃষকরা ধান নিজ গোলায় তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি মৌসুমে আমন ধানের খেতে ইঁদুরের খুব উৎপাত দেখা দেয়। ইঁদুর খেতের পাকা ধান কেটে গর্তে রাখে। এসব ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহের রীতিও বেশ পুরোনো। গর্ত থেকে সংগৃহীত এই পরিচিত ‘ইঁদুরধান’ হিসেবে। কৃষকরা জমি থেকে ধান নিয়ে যাওয়ার পর গ্রামাঞ্চলে সাধারণত ভূমিহীন ও দরিদ্র পরিবারের শিশু-কিশোররা দলবেঁধে হাতে খুন্তি-কোদাল, চালন, ডালা, ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ঘুরে ঘুরে খুঁজেছে ইঁদুরের গর্ত। সেই ইঁদুরের গর্তে জমানো ইঁদুরধান গর্ত খুঁড়ে ব্যাগে ভরেছে শিশুরা। তার পাশাপাশি ধানের শীষ কুড়াতে অনেক নারীকেও দেখা যায়।
ধানের শীষ কুড়ানো আজিনা বেগম বলেন, ‘হামার (আমার) আর কোন আবাদি জমি নাই। তাই ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর যেসব ধানের শীষ মাটিতে পড়ে থাকে সেসব ধানের শীষ কুড়ানো ও ইন্দুরের খাইল (গর্ত) খুঁড়ি দেড় দুই মন ধান পাই। তা দিয়ে ২-৩ মাস গরিবের সংসারে (খোরাকি) খাবার হয়ে যায়।
সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের চিনিপাড়া এলাকার কৃষক আ: রহমান জানান, ইঁদুর ফসলের বড় শত্রু। তাই ধানকুড়ানিরা ইঁদুরের গর্ত খুঁড়লে তাদের বাধা দেয়া হয় না। কারণ গর্ত খুঁড়লে খেত থেকে ইঁদুর পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে লালমিনরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো: সাইখুল আরিফিন বলেন, আমন মৌসুমে মাঠে মাঠে ধানকুড়ানিদের দেখা মেলে। এই ইঁদুরধান সংগ্রহের বিষয়টি বাংলার আবহমান কৃষি সংস্কৃতিরই অংশ। তবে অবুঝ শিশু-কিশোরদের ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করা নিরাপদ নয়। আধুনিক পদ্ধতিতে ধান কাটা ও মাড়াই করলে ধান মাটিতেও পড়বে না। আবার ইঁদুরও নষ্ট করতে পারবে না। এতে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement