প্লাস্টিকের দাপটেও টিকে আছে বাঁশ শিল্প
- জাকরিয়া শেখ ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)
- ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্লাস্টিকের দাপটেও টিকে আছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য বাঁশ শিল্প। বর্তমানে নির্বিচারে বাঁশ কাটা, পরিচর্যার অভাবে বাঁশঝাড় ক্রমশই কমে যাচ্ছে। উজাড় হচ্ছে প্রকৃতির দুর্যোগ প্রতিরোধক ও পরিবেশের পরম বন্ধু বাঁশঝাড়। এ কারণে গ্রামের হাটবাজার গুলোতে বাঁশের তৈরি শিল্প আগের মতো আর চোখে পড়ে না। এ শিল্পের সাথে জড়িত থাকা পরিবারগুলো এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শিল্পের বাজার ধস, বাঁশের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে কুটির শিল্পীরা বাধ্য হচ্ছেন তাদের পৈতৃক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে। ফলে এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল অনেকেই বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার খরিবাড়ী বাজারে দেখা যায়, উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের সেনের খামার গ্রামের কান্তেশ্বর বর্মন হরেক রকমের বাঁশের তৈরি কুলা, ডালা, টুপরি, কুড়ি চালুন, তালাই, ঝাঁটা হোঁচা, মাছ ধরার খালুই, পলো, দারকি, ধীল, চাঁই এবং বিভিন্ন সৌখিন খেলনা হস্তশিল্প বিক্রি করছেন। তিনি জানান, আমন মৌসুমে ধান ঘরে তোলার সময় হওয়ায় এর চাহিদা বেড়েছে। ফলে বর্তমানে বাজারে এর বিক্রি বেড়েছে।
বাঁশের শিল্পের সাথে জড়িত পানিমাছ কুঠি গ্রামের আসাদুল বলেন, ‘আগে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র বাড়িতে তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে অনেক টাকা উপার্জন হতো। কিন্তু এখন প্লাস্টিকের দাপটে এগুলো বেশি একটা বিক্রি হয় না।
উপজেলার সুজনের কুঠি গ্রামের রাজু জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাঁশের পরিবর্তে প্লাস্টিকের তৈরি ডালা, কুলা, চাইলন, ধান ও চাল রাখার জন্য প্লাস্টিকের ড্রাম ব্যবহার হচ্ছে বেশি। ফলে গ্রামের মানুষের ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি ধানের গোলা, ডালি, কুলা, মাছের খলই ও মাছ ধরার পলো, টুশি, বাঁশের তৈরি পাখা ইত্যাদির জায়গা দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক। আগে পরের সবাই দিন রাত পরিশ্রম করে কাজ করতাম কিন্তু এখন লাভ না হওয়ায় কোনো রকমে বাপ দাদার পেশা হিসাবে ধরে রেখেছি।
ফুলবাড়ী উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা ললিত মোহন রায় জানান, বর্তমানে প্লাস্টিকের তৈরি সস্তা দরের বিভিন্ন জিনিসপত্র এসব পণ্যের স্থান দখল করে নিয়েছে। ফলে প্লাস্টিকের এসব জিনিস পত্রের সাথে পাল্লা দিয়ে টিকতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এই কুটির শিল্পটি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা