শরীয়তপুরে বাড়ছে বিনা চাষে পেঁয়াজ-রসুনের আবাদ
- শরীয়তপুর প্রতিনিধি
- ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১২
খরচ কম ও দ্বিগুণ ফলন হওয়ায় শরীয়তপুরে বাড়ছে বিনা চাষে পেঁয়াজ-রসুনের আবাদ। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই জমির ভেজানরম মাটি পেঁয়াজ-রসুন আবাদের জন্য উপযোগী হয়ে উঠে। এ সুযোগটাই কাজে লাগান কৃষকরা। তারা তখন চাষবিহীন পলিমাটিতে পেঁয়াজ রসুন বপন করতে থাকেন। খুবই অল্প খরচে এবং উর্বর মাটিতে বেশ ভালো ফলন পান তারা।
তবে এবার জমি উপযোগিতায় আসার আগেই (আবাদ মৌসুমে) দুই দফায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আবাদ কিছুটা বিলম্বিত হয়। কিন্তু তাতেও থেমে নেই কৃষকের স্বপ্ন। তারা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বিনাচাষে পেঁয়াজ-রসুন আবাদে। তবে শুধু বিনাচাষেই নয়, এ জেলার কৃষকরা চাষাবাদের মাধ্যমেও প্রচুর পেঁয়াজ-রসুনের আবাদ করে থাকেন।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, ২০০৬ সাল থেকে শরীয়তপুরে বিনাচাষ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ-রসুনের আবাদ শুরু হয়। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও মাঠপর্যায়ে কারিগরি সহায়তা দেয়ায় এই পদ্ধতি ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ পদ্ধতিতে আবাদের ফলে কৃষকের জমি চাষের খরচ (এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেচ খরচ) বাচে, বিঘাপ্রতি ফলনও তিন-চার মণ বেশি হয়। মালচিং হিসেবে কচুরিপানা ও খড় ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরা শক্তি বেড়ে যাওয়ায় জমিতে সারও বেশ কম ব্যবহার করতে হয়। ফলে আগের প্রচলিত চাষপদ্ধতির চেয়ে বিনাচাষ পদ্ধতি এ জেলায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
অক্টোবর মাসের শেষ দিকে বিনাচাষ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ-রসুন আবাদ শুরু হয়ে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে রোপণের কাজ শেষ হয়। রোপণের ৯০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে ফলন ঘরে তোলা যায়। এ বছর শরীয়তপুরে ৪ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ ও চার হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ। পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার ৩৮০ মেট্রিক টন এবং রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। শরীয়তপুর সদর উপজেলা ছাড়াও জাজিরা, নড়িয়া, ডামুড্যা, গোসাইরহাট এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলায় প্রচুর পেঁয়াজ-রসুনের আবাদ হয়ে থাকে।
নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের কৃষক টিটু মাদবর বলেন, এ বছর পেঁয়াজ-রসুন আবাদে চাষপদ্ধতিতে বিঘাপ্রতি ৪০-৪৫ হাজার টাকা ও বিনাচাষ পদ্ধতিতে ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তবে মৌসুমের শুরুতে দুই দফায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় রোপণে ১৫-২০ দিন বিলম্ব হয়েছে। সামনে আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ফলন ভালো হবে বলেই আশা করা যায়।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ-রসুনের আবাদ কিছুটা বিলম্বিত হলেও বর্তমানে আবহাওয়া বেশ অনুকূলে রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই এ জেলার কৃষকরা চাষ ও বিনাচাষ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ রসুনের করলেও বর্তমানে জমির উপযোগিতা বুঝে তারা বিনাচাষ পদ্ধতিকেই বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ পদ্ধতিতে উৎপাদন খরচ কম কিন্তু ফলন বেশি। ফলনও আগাম পাওয়া যায়। এতে আগাম বাজার ধরতে পেরে দামও বেশি পান তারা। আমরা কৃষককে উচ্চমূল্য পেতে এবং অধিক লাভবান হতে বিনা চাষে পেঁয়াজ-রসুন আবাদে উৎসাহী করে তুলছি। সেই সাথে মালচিং পদ্ধতি অবলম্বনে মাঠপর্যায়ে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি আগামীতে শরীয়তপুরে বিনা চাষপদ্ধতিতে পেঁয়াজ-রসুনের আবাদ আরা বৃদ্ধি পাবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা