শরণখোলায় হুমকির মুখে উপকূলরক্ষা বেড়িবাঁধ
- আনোয়ার হোসেন শরণখোলা (বাগেরহাট)
- ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর মধ্যরাতে সুপার সাইক্লোন সিডর আঘাত হানে বঙ্গোপসাগর উপকূলে। মুহূর্তের মধ্যেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় দক্ষিণের কয়েকটি জেলার জীবন ও জনপদ। সিডরে সবচেয়ে ভয়াবহরূপে আঘাত হেনেছিল বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালীতে। ২৪০ কিলোমিটার বেগের ঘূর্ণিঝড় এবং ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস বলেশ^র নদের তীরবর্তী বেড়িবাঁধ ভেঙে সবকিছু তছনছ করে দেয়। এ সময় স্থানীয় সাউথখালী ও রায়েন্দা ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষের নির্মম মৃত্যু হয়। এ ছাড়াও মারা যায় ১০ সহস্রাধিক গবাদিপশু। গৃহহীন হয়ে পড়ে আট হাজার পরিবার।
সিডর বিধ্বস্ত জনপদের মানুষের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকার বিশ^ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বাগেরহাটের শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩৫/১ পোল্ডারের ৬২ কিমি নদী তীরবর্তী এলাকায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ করে। কিন্তু বিশ^ব্যাংকের সিআইপি প্রোজেক্ট কর্মকর্তাদের অদূরদর্শীতা ও অবহেলার পাশাপাশি বাঁধ নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএইচডব্লিউ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির কারণে সদ্যনির্মিত বেড়িবাঁধটি এখন হুমকির মুখে।
গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধের কাজ হস্তান্তরের পরপরই ওই বাঁধের অন্তত ১৫টি পয়েন্টে ভূমিধস ও ব্লক ধস দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে আশার আলো মসজিদ, গাবতলা বাজার, বাবলাতলা, বড়ইতলা, রায়েন্দা রাজৈর এলাকার বেড়িবাঁধের প্রায় পাঁচ কিমি অঞ্চল। সাধারণ যে কোনো ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে এসব এলাকার বাঁধ ভেঙে গ্রামাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অতিদ্রুত নদী শাসন ও ব্লক রিপিয়ার করে বাঁধ রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।
ভাঙনকবলিত দক্ষিণ সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পঞ্চায়েত জানান, ভাঙন কবলিত এলাকায় নদী শাসন ছাড়া টেকসই বাঁধ হওয়া সম্ভব নয়। তৎকালীন সরকার ও বিশ^ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাঁধ নির্মাণে নদী শাসনের ব্যবস্থা না রেখে অদূরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছিল। এ ছাড়া, বাঁধ নির্মাণে তখন ব্যাপক দূর্নীতি হয়েছিল। মাটির বদলে নদীর বালু ব্যবহার করে বাঁধ উঁচু করা হয়েছিল। বর্তমান সরকারের কাছে এ দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানান তিনি।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুদীপ্ত কুমার সিংহ জানান, ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করা হয়েছে। ব্লক রিপিয়ারের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নদী শাসনের বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাগেরহাট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল বিরুনী জানান, ৩৫/১ পোল্ডারের সিআইপি প্রজেক্টের কাজ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাঁধের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা