‘মা নেই বাবা থেকেও নেই আমরা এখন কী করে বাঁচব’

‘মা-ও নাই, বাবা থেকেও নাই। আমরা এখন কী করে বাঁচবো’ ছোট জমজ দুই বোনকে কোলে নিয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিল কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের চিত্রাপাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার শিশু সন্তান সাজ্জাদ হোসেন। গত ৬ অক্টোবর যমজ দুই মেয়ে জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান মা। বাবা রয়েছেন কারাগারে আটক। এ অবস্থায় চারটি শিশু সন্তানের জীবনে নেমে এসেছে অমানিশার ঘোর অন্ধকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক মাস আগে দুই যমজ সন্তানকে জন্ম দেয়ার ছয়দিন পর মারা যান দিনমজুর জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগম। অন্যদিকে গত ৭ নভেম্বর রাতে জামাল মিয়াকে গ্রেফতার করে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ। গত শনিবার স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক আলি হোসেন দিদার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে। এ মামলায় জামাল মিয়া এখন কারাগারে রয়েছেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর দিদার স্বেচ্ছাসেবক দলের টুংগীপাড়া মিটিং শেষে ফেরার পথে হত্যার শিকার হন।
জামাল মিয়ার বড় ভাই মনির মিয়া বলেন, আমার ভাই বিগত সময় আমতলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিল। বর্তমানে সে কোনো দল করে না। পুলিশ কী কারণে তাকে গ্রেফতার করলো তা আমাদের জানা নেই। ঘরে তার দুই যমজ শিশুবাচ্চা। বৃদ্ধ অসুস্থ মা। তাকেও দেখা শোনা করতে হয়।
জামাল মিয়ার সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে সাজ্জাদ হোসেন বলে, আমরা চার ভাই বোন এখন কী করবো? আমাদের বোনের দুধ কেনার টাকা নেই। আমাদের খাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই। কয়েকদিন পরে আমার বার্ষিক পরীক্ষা। পরীক্ষার ফি কিভাবে দেব? ফি দিতে না পারলে আমার লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে যাবে।
সাজ্জাদ বলেন, ‘আপনারা আমার আব্বুরে আইনা দেন। তা না হলে আমরা এখন কী করে বাঁচবো?’
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানা ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেনেছি জামাল মিয়া ঢাকার তেজগাঁও থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এজন্য তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আমাদের কাছে তার গার্ডিয়ান পক্ষ যোগাযোগ করলে, চারটি শিশু সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে কিছুটা মানবিক দিক বিবেচনা করা যেতে পারে।