বস্তায় আদা চাষে সফল পা হারানো সেলিম
- মো: হুমায়ূন কবীর সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)
- ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৮
বস্তায় আদা চাষের সফলতার বিষয়ে কথা হয় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার উপজেলার পশ্চিম কুষ্টিয়ার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম। ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে দুই দশক আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরব। কিন্তু তার ভাগ্যোন্নয়নের পরিবর্তে তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। এক দুর্ঘটনায় তার জীবন তছনছ হয়ে যায়।
সৌদিতে দেড় বছর কাজ করার পর দুর্ঘটনায় একটি পা হারান তিনি। সেখানে তিন মাস চিকিৎসা শেষে খালি হাতে দেশে ফিরে আসেন। পঙ্গু জীবনে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। তবু থেমে থাকেননি জীবন সংগ্রামী সেলিম। এক পা নিয়েই বাবার সাথে কৃষিকাজ শুরু করেন। বিভিন্ন জাতের সবজি চাষাবাদ শুরু করেন। তবে এতে সংসার ভালোভাবে চলছিল না। একপর্যায়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শে ও সহযোগিতায় বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। আর এতে সাফল্য এসে ধরা দেয় তার কাছে। বস্তায় আদায় চাষ করে এলাকার কৃষকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। এক পা না থাকায় প্রতিনিয়ত তার একমাত্র ছেলে অনার্স শেষ করে কৃষিকাজে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
সরেজমিন কৃষক সেলিম বলেন, আগে মাটিতে আদা চাষ করে ফলন ভালো পাইনি। এবার ১২ শতাংশ জমির মধ্যে তিন শতাংশ জমিতে উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় প্রথম বস্তায় আদায় চাষ শুরু করেছি। পাঁচ টাকা দরে ৮৫০টি বস্তা কিনে দিন মজুর দিয়ে মাটি ভরাট করেছি। এতে খরচ হয়েছে সাত হাজার টাকা। এ পর্যন্ত আমার প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে বাম্পার ফলন পেয়েছি।
তিনি আরো জানান, আদা চাষে রোগবালাই কম হওয়ায় সার-কীটনাশকও লাগে কম। আগামীতে ১২ শতাংশ জমিতেই বস্তায় আদা চাষ করব।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কৃষক সেলিমকে পাহাড়ি আদা (বীজ আদার কন্দ) ও প্রয়োজনীয় জৈবসার দিয়েছি। তার প্রতি বস্তায় ৭০০-৮০০ গ্রাম আদা হতে পারে। এ উপজেলায় তিন বছর ধরে বস্তায় আদা চাষ করেছেন ২৩০ জন কৃষক। আর উৎপাদন হয়েছে তিন হাজার ৭২৫ বস্তা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৪৩৫ জন কৃষক ২০ হাজার ২১৫ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হেক্টর হলেও ৩৫ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছে। তিনি আদাচাষে আগ্রহীদের সার্বিক সহযোগিতা করার কথা জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা