লংগদুর কাট্টলী বিলে বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন
- বিপ্লব ইসলাম লংগদু (রাংগামাটি)
- ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রাংগামাটির কাপ্তাই হ্রদের শুঁটকি মাছ জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির এসব শুঁটকি। দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছ থেকে উৎপাদিত শুঁটকির একটি বড় অংশ উৎপাদন হয় কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য থেকে। আগে দামে সস্তা থাকায় শুঁটকিকে গরিবদের খাবার বলা হতো। কিন্তু এখন বদলে গেছে শুঁটকির সেই অবস্থান। শুঁটকি এখন দেশের ধনীদের খাবার ম্যানুতে স্থান পাচ্ছে। এমনকি দেশের বিভিন্ন নামী-দামি রেস্টুরেন্টে ও বিলাসবহুল হোটেলেও শুঁটকির বিশেষ চাহিদা রয়েছে।
এবার শীতের শুরু থেকে কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন এলাকার নদী পাড়ে কাঁচা মাছকে রোদে শুকিয়ে ‘শুঁটকি মাছ’ উৎপাদনের ধুম পড়েছে। আগামী এপ্রিল-মে পর্যন্ত টানা চলবে শুঁটকি উৎপাদনের মৌসুম। অনুকূল আবহাওয়া ও সূর্যালোকের কারণে লংগদু উপজেলায় প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি কাঁচা মাছের শুঁটকি উৎপাদন হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
লংগদু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় ছোট ছোট অনেক শুঁটকির সাইট। তবে কাপ্তাই হ্রদের কাট্টলী বিলের মধ্যস্থানে অবস্থিত কাট্টলী বাজারে গিয়ে দেখা যায় বৃহৎ পরিসরের বেশ কয়েকটি শুঁটকির ঘের। সরজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সের ২০-৩০ জন মানুষ মহাব্যস্ত শুঁটকি উৎপাদনে। কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন এলাকা হতে মাছ নিয়ে অসংখ্য ট্রলার কাট্টলী বিলের বাজার ঘাটে ভিড়ছে। এসব ট্রলারে আসা বিভিন্ন রকমের কাঁচা মাছ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করা হয়। এ ছাড়া মাইনী মুখ, কালাপাকুজ্জা, মাহিল্যা, গুলশাখালী, বগাচতর, ভাসাইন্যাদম, ফোরের মুখ, সাদু টিলাসহ লংগদু উপজেলার নদী পাড়ের মানুষের কয়েক হাজার বসত ঘরের ছাদে ও উঠানে মাচা বানিয়ে মাছ শুকিয়ে বানানো হচ্ছে শুঁটকি।
শুঁটকি উৎপাদনকারীরা জানান, এখানে উৎপাদিত বেশির ভাগ শুঁটকিতে কোনো কেমিক্যাল মেশানো হয় না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে নদী পাড়ের পাশে মাচা বানিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি। তাই কাপ্তাই হ্রদের শুঁটকির চাহিদা সারা বাংলাদেশে।
উপজেলার এক শুঁটকি ব্যবসায়ী জানান, এখানে কেচকি, চাপিলা, চান্দা, পুঁটি, শোল, চিংড়ি, বাইম, ফলিপাতা, তেলাপিয়া মাছসহ অন্তত ১২-১৫ প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি করা হয়। বর্ষাকাল ছাড়া বছরের বাকি ৫-৬ মাস এখানে শুঁটকি উৎপাদন চলে। নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল-মে পর্যন্ত এখানে প্রতিদিন গড়ে পাঁচশ’ থেকে ছয়শ’ কেজি কাচা মাছের শুঁটকি উৎপাদিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা মৎস্য কর্মকতার সাথে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মেসেজ দিয়েও তার থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা