০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জলাবদ্ধ জমির পানিফলে কৃষকের সুদিন ফিরেছে

-

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় জলাবদ্ধ পতিত জমিতে শোভা পাচ্ছে এক ধরণের ফল। যার নাম ‘পানিফল’ বা ‘পানি সিঙ্গারা’। এই পানিফল চাষ করে পরিবারে সুদিন ফিরেয়ে আনছেন অনেক চাষি। পৌর সদরের যুগীবাড়ি থেকে মুরারীকাটি পর্যন্ত যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে পানিফল বিক্রি করছেস চাষিরা। এ ছাড়া প্রতিদিন তারা জমি থেকে পানিফল তুলে বস্তায় ভরে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন যশোর, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে।
কলারোয়া উপজেলায় চলতি বছর ৩২ হেক্টর জমিতে পানিফল চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাস জানান, পানিফল বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। পানিফলের পুষ্টিমান অনেক। কলারোয়া উপজেলার পতিত জমিতে এই ফলের চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রতি বছর ইরি-বোরো ধান কাটার পর জলাবদ্ধ পতিত জমিতে অথবা পানি জমে থাকা ডোবা কিংবা বিলে এই ফলের বীজ রোপণ করতে হয়। তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যে গাছে ফল আসতে শুরু করে। এই ফল চাষে সার কিংবা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না।

বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি পানি ফল প্রকার ভেদে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় অনেকেই পানিফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কলারোয়া উপজেলায় এখন বাণিজ্যিকভাবে এই ফলের চাষ হচ্ছে। তাদের দেখে অন্যান্য উপজেলার চাষিরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন পানিফল চাষে। তারা সরেজমিনে এসে দেখে যাচ্ছেন এই ফলচাষ পদ্ধতি।
পৌর সদরের গোপিনাথপুর গ্রামের কয়েকজন পানিফল চাষি এ প্রতিবেদককে জানান, তারা ১৩ বছর ধরে পানিফল চাষ করছেন। সার-কীটনাশকের প্রয়োজন নেই। অন্যান্য ফসলের চেয়ে এর পরিচর্যাও কম। অল্প খরচে বেশি লাভ।
কলারোয়া সদরের আয়জুল, লাভলু, ওসমান গণিসহ কয়েকজন চাষি জানান, জলাবদ্ধ জমিতে পানিফলের চাষ করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়। আর ফল বিক্রি করা যায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শুভ্রাংশ শেখর দাস বলেন, মৌসুমি ফল হলেও পানি ফলের চাহিদা বাড়ছে। এতে করে পড়ে থাকা অনেক পতিত জমি কাজে লাগানো যাচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে পানিফলের চাষ করলে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হয়। আমরা পানিফল চাষের ব্যাপ্তি ঘটাতে কৃষকদেরকে উৎসাহিত করছি।


আরো সংবাদ



premium cement