ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জেলেদের সমুদ্রযাত্রা
- সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ও মোংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা
- ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শুরু হয়েছে সুন্দরবনের দুবলার চরের শুঁটকি তৈরির মৌসুম। শুঁটকি পল্লীতে শুরু হচ্ছে কর্মব্যস্ততা। জীবনের ঝুঁঁকি ও ঋণের বোঝা নিয়ে মৎস্য আহরণে সমুদ্রে যাত্রা করছে জেলারা। সমুদ্রে মৎস্য আহরণকে ঘিরে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে উপকূলের জেলে-মহাজনেরা। সাগরে যেতে যে যার মতো প্রস্তুত করেছেন জাল, দড়ি, নৌকা-ট্রলার। প্রস্তুতি অনুযায়ী অনেকেই আগেভাগে রওনা দিচ্ছেন। অনেকেই আবার সাগরে যেতে ইতোমধ্যে চলে এসেছে মোংলা পশুর নদীর পাড়ে। গত ৩ নভেম্বর রাত ১২টার পরপরই দুবলার চরের উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছেন জেলেরা। আগামী পাঁচ মাস তারা সেখানে তৈরি করবেন বিভিন্ন জাতের মাছের শুঁটকি।
দুবলার চর বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনের দক্ষিণে, কটকার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং হিরণ পয়েন্টের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত একটি দ্বীপ যা চর নামে হিন্দুধর্মের পুণ্যস্নান, রাসমেলা এবং হরিণের জন্য বহুল পরিচিত। কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে এটি একটি বিচ্ছিন্ন চর। এ চরের মোট আয়তন প্রায় ৮১ বর্গমাইল। আলোরকোল, হলদিখালি, কবরখালি, মাঝেরকিল্লা, অফিসকিল্লা, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয় এবং মেহের আলির চর নিয়ে দুবলার চর গঠিত।
বর্ষা মৌসুমের ইলিশ শিকারের পর বহু জেলে পাঁচ-সাড়ে পাঁচ মাসের জন্য সুদূর কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ, বাগেরহাট, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা থেকে ডেরা বেঁধে সাময়িক বসতি গড়ে সেখানে। মেহেরআলীর খাল, আলোরকোল, মাঝেরচর, অফিসকেল্লা, নারিকেলবাড়িয়া, মানিকখালী, ছাফরাখালী, শ্যালারচর ইত্যাদি এলাকায় জেলে পল্লী স্থাপিত হয়। এখান থেকে শুঁটকি পাইকারী বাজারে মজুদ ও বিক্রয় করা হয়।
সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগ থেকে মাছ সংগ্রহের অনুমতি সাপেক্ষে বহরদার ও জেলেরা দুবলার চরে প্রবেশ করে থাকেন। দুবলার চর থেকে সরকার নিয়মিত হারে রাজস্ব পেয়ে থাকে।
জেলেরা বলছেন চড়া সুদে টাকা নিচ্ছেন সুদের কারবারিদের কাছ থেকে। এনজিও, বিভিন্ন ব্যাংক ও সমিতি থেকে ঋণ করছেন। ঋণ, সুদের বোঝার সঙ্গে এমন দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়েই পাঁচ মাসের এক অনিশ্চিত জীবন শুরু করতে চলছেন তারা।
বহদ্দারের শুভংকর হালদার বলেন, এ বছরও পাঁচ লাখ টাকা ঋণ করেই সাগরে যাচ্ছি। সরকারিভাবে আমরা তেমন কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাই না। জেলে সমর হালদার বলেন, বনবিভাগের পাস নিয়ে ধার দেনা করেই আমাদের যেতে হয় সাগরে। তবে অনেকে এবার সুদে টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বর্ণের জিনিস থুইয়ে টাকা আনতে হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা