চৌগাছায় পুলিশের সোর্সদের নিয়ন্ত্রণে মাদক কারবার
- চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা
- ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যশোরের চৌগাছায় পুলিশের নাম ভাঙিয়ে অপরাধ সোর্সদের নিয়ন্ত্রণে চলছে মাদক কারবার। মাদক কারবারের অন্যতম ট্রানজিট পয়েন্ট এখন সীমান্ত এলাকা চৌগাছা। উপজেলার কুলিয়া, আন্দুলিয়া, দৌলতপুর, মাশিলা, কাবিলপুর, গদাধরপুর, বর্ণি, আড়শিংড়ি, পুকুরিয়া ও বল্লভপুর রুটে প্রতিদিন মাদকের বিপুল পরিমাণ চালান প্রবেশ করছে। এসব চালানের মধ্যে রয়েছে গাঁজা, ইয়াবা ও ফেনসিডিল। তবে ফেনসিডিলের চেয়ে এখন সবচেয়ে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে মরণনেশা ইয়াবা। এমন কোনো পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে ইয়াবার কারবার হচ্ছে না।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের সাথে সখ্যতা তৈরি করে পুলিশের সোর্সরাই বিভিন্ন কৌশলে পুলিশের অজান্তেই তাদের নাম ভাঙিয়ে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। সোর্সরা আসামি ধরার নামে পুলিশের সাথে গাড়ি বা মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়ান। যে কারণে সোর্সরূপী মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অপরাধী গ্রেফতারে নানা তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করাই সোর্সের কাজ। কিন্তু সোর্সরা অপরাধী ও মাদক কারবারিদের ধরিয়ে দিয়ে নিজেরাই কারবার শুরু করেছেন। তারা মাঝে মধ্যে বিরোধী গ্রুপের দুই-চারজনকে গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ ধরিয়ে দিয়ে নিজেদের কারবার নিরাপদ রাখেন। তাদের ছত্রছায়ায় অর্ধশতাধিক মাদকের স্পট তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের নীরবতায় দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে অপরাধীদের সংখ্যা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, উপজেলার মাশিলার বাজার, তিলকপুর বাজার, আন্দুলিয়া বাজার মোড়, চৌগাছা পৌর শহরের মাছ বাজার, পাকিস্তান রোড এলাকা, ঢেকিপুতার মোড় ও কাবিলপুর বাজার এলাকাসহ অসংখ্য স্পটে চলছে মাদক বেচাকেনা।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে সাধারণত পুলিশের সোর্সের বাজেটের একটি বড় অংশ সোর্সমানি বরাদ্দ থাকলেও তা কখনো সোর্সদের দেয়া হয় না। তাই পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও মাদক কারবার করেই তাদের পাওনা পুষিয়ে নেন।
অপর একটি সূত্র বলছে, সোর্সমানি না দিলেও জব্দকৃত মাদকের একটি অংশ সোর্সদের দেয়া হয়ে থাকে। পরে সোর্সরা তাদের লোক দিয়ে এসব মাদক বিক্রি করে থাকেন। অধিকাংশ সোর্সই মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় একাধিকবার পুলিশের হাতে মাদকসহ আটক হন। এরপর থেকেই পুলিশের সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে হয়ে ওঠে আরো ঘনিষ্ঠ। আইনের ফাঁকে বেরিয়ে এসেই শুরু করে তাদের পুরোনো কর্মকাণ্ড, সাথে যোগ করেন পুলিশের সোর্স হিসেবে বাড়তি ক্ষমতা। আর এই ক্ষমতাবলে নিরীহ জনসাধারণকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেন। অন্যদিকে প্রকৃত মাদক কারবারিদের কাছ থেকে মাসোহারা ও সাপ্তাহিক আদায় করে নিজের ভাগেরটা রেখে অসাধু পুলিশ সদস্যদের তা দিয়ে থাকেন।
এ ব্যাপারে মাশিলা বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মিজানুর রহমান বলেন, মাশিলা সীমান্ত দিয়ে মাদক আসার কোনো সুযোগ নেই। তবে আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক পারাপার হতেও পারে।
এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, মাদকের সাথে আমাদের কোনো আপস নেই। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এখানে মাদকের সাথে অনেকে জড়িত রয়েছে। আমরা মাদক কারবারিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। কোনো পুলিশ সদস্য মাসোহারা ও সাপ্তাহিক আদায় করেন না। কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এমন কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা