০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩০, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৫
`

হাতিয়ায় ভাড়া করা কক্ষে আদালতের কার্যক্রম

বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি
-

হাতিয়া দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত ভবন ২০১৩ সালে গণপূর্ত বিভাগ পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে বিধি মোতাবেক ভেঙে ফেলা হয়। প্রায় এক যুগ অতিবাহিত হলেও আদালতের নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় বিচারাধীন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাড়া করা কয়েকটি কক্ষে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিচার কাজ পরিচালনা করতে হচ্ছে।
২০১৪ সাল থেকে উপজেলা বিআরডিবির ভবনের নিচ তলায় ৪৫ হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় সাময়িক আদালতের কার্যক্রম চলছে। অনিরাপদ, ছোট কক্ষ ও পুরাতন ভবন হওয়ায় বৃষ্টিতে দেয়াল গড়িয়ে পানি পড়ে। এতে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও আলামত চেয়ার-টেবিলের ওপরে অরক্ষিত অবস্থায় রাখতে হচ্ছে। বিচারপ্রার্থী নারী ও পুরুষদের শৌচাগারের সঙ্কট। কক্ষে জায়গা না থাকায় বাইরে পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে বিচার কাজে অংশ নিতে হয় বিচারপ্রার্থীদের।
বর্তমানে এখানে কোনো সাবজেল না থাকায় গ্রেফতারকৃত আসামিকে নিরাপদ জায়গায় রাখা সম্ভব হয় না। দ্বীপ উপজেলাতে কোনো সাব-জেল না থাকায় জেলা কারাগার হতে আসামি আনা নেয়া করতে হয় ২০ কিলোমিটার নদী পথে, আরো ৫০-৬০ কিলোমিটার সড়ক পথে জেলা দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত করতে হয়। থানা ও আদালতের এই ধরণের আসামি একত্রে নদী পার করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কষ্টকর এবং এ দায়িত্ব পালনে পুলিশের গলদঘর্ম হতে হয়। বিশেষ করে মহিলা হাজতীদের ক্ষেত্রে। সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বিচারযোগ্য নয় এমন মামলাগুলো শুনানীর জন্য জেলা সদরে যেতে হয়।

হাতিয়া আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, হাতিয়া দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের একটি ভবনের নকশা অনুমোদন করে টেন্ডার করার জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠায় জেলা দায়রা জজ নোয়াখালী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের নিরবতায় ভবনের দেখা হাতিয়াবাসীকে আর কত অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে?
এ দিকে ভাসানচরের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিচারসহ হাতিয়ায় লাখ লাখ মানুষের বিচারের আশ্রয়স্থল এই আদালত। সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম বলেন, ন্যায় বিচারের সুবিধার্থে আধুনিক আদালত ভবনের পাশাপাশি যুগ্ম জেলা জজের পদ ও বিচার কার্যক্রম পরিচালনা আবশ্যক। কেননা চরফ্যাশনসহ কয়েকটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে যুগ্ম জেলা জজ আদালত স্থাপিত হয়েছে। হাতিয়ায় এটা এখন সময়ের দাবি।
এ প্রসঙ্গে হাতিয়া আইজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ২০১৭ সাল থেকে আইনমন্ত্রীর বারবার আশ্বাস এবং পরিত্যক্ত আদালত ভবনের জায়গায় পাঁচতলা চৌকি আদালত ভবনের নকশা অনুমোদন হওয়া সত্ত্বেও হাতিয়ায় আদালত ভবন নির্মাণ না হওয়া অত্যন্ত কষ্টকর। আমি আশা করব হাতিয়া দ্বীপের গণমানুষের অধিকার ও সুষ্ঠু বিচারিক কর্মকাণ্ডের সুবিধার্থে আদালতের অনুমোদিত পাঁচতলা ভবন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। বিচারপ্রার্থী ও প্রশাসনিক দফতরের কাজ আরো সহজ ও সুবিধার জন্য এ ভবনটির গুরুত্ব অপরিসীম।


আরো সংবাদ



premium cement