০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১,
`

ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বপ্নের দ্বার খুলতে পারেনি ধরলা সেতু

সংযোগ সড়কের সেতু নির্মাণে ধীরগতি
ফুলবাড়ীতে ৬ বছর আগে খুলে দেয়া ধরলা সেতু। (ডানে) সংযোগ সড়কে নির্মাণাধীন সেতু : নয়া দিগন্ত -

বহুল প্রতীক্ষিত কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা সেতু ২০১৮ সালের ৩ জুন উদ্বোধন করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অধীন ২০৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বথ্যথয়ে নির্মিত ধরলা সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৫০ মিটার ও প্রস্ত ৯.৮ মিটার। ছয় বছর আগে এ সেতু চালুর মধ্য দিয়ে উত্তর ধরলার জনপথদে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কমেছে যাতায়াতের সময় ও পথের দূরত্ব। কিন্তু সংথযোগ সড়থকে রতœাই নদীর ওপর একটি সেতুর কারথণে সুফল বঞ্চিত ধরলা পাড়ের উত্তর কুড়িগ্রামের লাখো মানুষ। রতœাই নদীর ওপর পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুর কারণে ধরলা অর্থবহ হয়ে উঠছে না। একই সাথে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না হওয়ায় উদ্যোক্তারাও এ অঞ্চলে বিনিয়োগ ও শিল্পকারখানা করতে তেমন এগিয়ে আসছেন না। ফলে কৃষিখাত ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে এ অঞ্চলের অর্থনীতি।

ধরলা সেতু চালু হওয়ার পর এ অঞ্চলে কৃষি শিল্পের প্রসার ঘটার আশা ছিল এলাকাবাসীর। কিন্তু সেতু উদ্বোধনের ছয় বছর পার হলেও এ গতি মন্থর। ফলে জেলার ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামরী উপজেলায় ব্যবসা-বাণিজ্যে অর্থনৈতিক সফলতার স্বথপ্নের দ্বার উন্মোচন করতে পারেনি এই সেতুটি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ধরলা সেতু উদ্বোধনের ছয় বছর হয়ে গেলেও সংযোগ সড়থকে রতœাই নদীর ওপর জরাজীর্ণ বেইলি সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট পিকাপ ভথ্যাথনে কথরে মালামাল পার করছেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়থ লোকজথনের অথভিযোগ, সেতু নির্মাণকাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবথহেলা, শ্রমিক সঙ্কট ও সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণ নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। এতে সেতুর নির্মাণকাজে দেখা দিয়েছে ধীর গতি। ফলে ২০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ধরলা সেতু উদ্বোধনের সাড়ে ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও কাক্সিক্ষত সুফল পাচ্ছে না কুড়িগ্রামের উত্তর ধরলার মানুষ।
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রতœাই নদীর ওপর বেইলি সেতুর পাশে ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১০ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের আরেকটি সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২৫ সালের ১৮ জানুয়ারি সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকথলেও এ পর্যন্ত সেতুটির ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটির উভয় পার্শ্বে সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণ করতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ। কংক্রিট অ্যান্ড স্টিল টেকনোলোজি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণকাজ করছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম জানান, রতœাই নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখনো রতœাই নদীর ওপর পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু ব্যবহার করছি। বেইলি সেতুর ওপর দিয়ে ট্রাক চলাচল করতে না পারায় পরিবহন বথ্যয় বেশি হথচ্ছে। ফথলে এর প্রভাব পড়থছে স্থানীয় বাজাথরে।
মুদি ব্যবসায়ী মুকুল মিয়া জানান, রতœাই নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ট্রাকের পরিবর্তে ইজিবাইক ও ট্রলিতে মালামাল পরিবহন করতে হচ্ছে। এ কারণে আমাদেরকে অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়া ব্যয় করতে হচ্ছে।’ সেতুটির নির্মাণকাজ খুবই ধীরগতিতে চলছে।
এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আব্দুল মোমেন জানান সংযোগ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় সেতুর নির্মাণকাজ স্থবির হয়ে পথড়ে। জমি অধিগ্রহণের জন্য ২ কোটি ৯০ লাখ টাকার অনুমোদন হয়েছে। দ্রুত জমির মালিকদের টাকা বুঝিয়ে দেয়া হবে। ২০২৫ সালের মধ্যেই সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement