জুড়ীতে কমলা বাগানে পোকার আক্রমণ, হতাশায় চাষিরা
- এ বি এম নূরুল হক জুড়ী (মৌলভীবাজার)
- ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পোকা-মাকড়ের আক্রমণে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে জুড়ীর জনপ্রিয় কমলা শিল্প। একাধারে মারা যাচ্ছে পুরনো কমলা গাছ। পাশাপাশি নতুন চারা বড় হওয়ার আগেই মারা যাচ্ছে। চতুর্মুখী আক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ফলে হতাশায় ভুগছেন কমলা চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৯৬.৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯৫টি কমলা বাগান রয়েছে। তার মধ্যে গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নে আছে ৬২ হেক্টর। এ অঞ্চলে খাঁসি ও নাগপুরি জাতের কমলা আবাদ হচ্ছে।
গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের লালছড়া গ্রামের কমলা চাষি মোর্শেদ মিয়া জানান, তার বাগানে প্রায় ১২শ’ কমলা গাছ ছিল। গত তিন বছরে ৪শ’ গাছ মরে গেছে। বর্তমানে বাকি গাছের মধ্যে প্রায় ২শ’ গাছ মারা যাওয়ার পথে। তিনি আরো জানান, প্রথমে এক ধরনের সাদা পোকা মাটির নিচে কমলা গাছের শিকড় থেকে পানি চুষে ফেলে। পরে উঁইপোকারা শিকড় খেয়ে ফেলে। তাতে প্রথম বছর গাছের পাতা হালকা হলুদ হয়। দ্বিতীয় বছর পাতা পুরোপুরি হলুদ হয়ে যায় এবং পাতা ঝরা শুরু হয়ে যায়। আর তৃতীয় বছর গাছটি মারা যায়। মোর্শেদ আরো জানান, পোকার আক্রমণের শুরুতে কমলার আকার স্বাভাবিক থাকলেও দ্বিতীয় বছর আকার ছোট এবং পরের বছর একেবারে ছোট হয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদুল আলম খান বলেন, কমলা চাষিদের দেয়া তথ্য ও সম্প্রতি আমাদের পরিদর্শনে বেশকিছু সমস্যা নির্ণয় করা হয়েছে। বাগানগুলো পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কিছুটা বেশি। উইপোকা, মিলিবাগ, ফোমিংয়ের পর বিটল, গান্ধীপ্রজাতির (ফুট সাকার) মত পোকার আক্রমণ আছেই। আমরা চাষিদের বেশ কিছু কীটনাশক সরবরাহ করেছি। এর মধ্যে কিছু কাজ করেছে এবং কিছু করে নাই। কৃষি গবেষণা থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল নিয়ে আসা দরকার। কারণ, এখানে অপরিচিত কিছু মথ আছে, যেগুলোকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর জানান, সম্প্রতি কৃষি অফিসারসহ আমরা কমলা বাগানগুলো পরিদর্শন করেছি। সমস্যাগুলো বিশ্লেষণসহ সুপারিশ আকারে আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করাব, যাতে করে কমলা চাষ সমৃদ্ধ হয় এবং চাষিরা উপকৃত হন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা