হাবিপ্রবিতে ছাত্রসংসদ না থাকলেও ফি গুনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের
‘অতিরিক্ত ১০০ টাকা যে প্রতি সেমিস্টারে সবাই দিচ্ছি, সেই টাকাটা কোথায় খরচ হচ্ছে? এখনো সেই টাকাটা নেয়া হচ্ছে। এতো এতো টাকা যাচ্ছে কোথায়? কোন খাতে ব্যয় হচ্ছে’- হাবিপ্রবি সংবাদদাতা
- ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছাত্রসংসদ না থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি সেমিস্টারে নেয়া হয় ছাত্রসংসদ ফি। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের আগে কৃষি কলেজ থাকা অবস্থায় ছাত্রসংসদ চালু থাকলেও ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পর অদ্যাবধি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কোনো ছাত্রসংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রতি সেমিস্টারে ছাত্রসংসদ ফি বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর থেকে ১০০ টাকা করে নেয়া হয়। সে হিসেবে প্রতি সেমিস্টারে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ ফান্ডে জমা হয় ১১ লাখ ২০ হাজার ৩০০ টাকা। ছাত্রসংসদ চালু না থাকলেও কেন নেয়া হয় এই ফি এবং আদায়কৃত অর্থই বা কোন খাতে ব্যয় হয় সে বিষয়েও অবহিত নন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্রসংসদ ফি দিতে নারাজ শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রসংসদ চালু না থাকলেও ছাত্রসংসদ ফি নেয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসনীমুল হাসান প্লাবন বলেন, হাবিপ্রবিতে নেই ছাত্রসংসদ। অথচ সেই শুরু থেকেই দেখে আসছি এনরোলমেন্ট হলেই কেন্দ্রীয় সংসদ ফি নেয়া হয়। অতিরিক্ত ১০০ টাকা যে প্রতি সেমিস্টারে সবাই দিচ্ছি, সেই টাকাটা কোথায় খরচ হচ্ছে? এখনো সেই টাকাটা নেয়া হচ্ছে। এতো এতো টাকা যাচ্ছে কোথায়? কোন খাতে ব্যয় হচ্ছে?
ইংরেজি বিভাগের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী সজিব হোসেন বলেন, একে তো সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট ফি দিয়ে পড়তে হয় আমাদের তার ওপর রয়েছে খাত বহির্ভুত ফি। হাবিপ্রবিতে কোনো ছাত্র সংসদ নেই। কিন্তু প্রতি সেমিস্টারে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে গুনতে হচ্ছে ছাত্রসংসদ ফি। আমরা জানি না এই টাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে বিগত সময়ে আদায়কৃত ছাত্রসংসদের নামে আদায়কৃত টাকার স্পষ্ট হিসাব শিক্ষার্থীদের কাছে পরিস্কার করতে হবে।
মার্কেটিং বিভাগের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া বলেন, আমরা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, তারা বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসি। ছাত্রসংসদ চালু না থাকলেও প্রতি সেমিস্টারে আমাদের থেকে একশত টাকা করে নেয়া হয় যেটা অযৌক্তিক। আদায়কৃত এই ফি আসলে কোন খাতে খরচ হয় তা আমরা জানতে চাই। সেই সাথে ছাত্রসংসদ চালু না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসন এই ফি নেয়া বন্ধ করবে বলে আমি আশা রাখছি।
এ বিষয়ে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির একটি ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হাসান ফুয়াদ এল তাজ বলেন, ছাত্রসংসদ বাবদ আদায়কৃত ফি মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টারে ও হলগুলোতে ব্যবহার করা হয়। যে অর্থ আসে তা বিভিন্ন খাতে যেমন- খেলাধুলা, পত্রিকা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। এই অর্থ ব্যবহার করার কথা ছাত্রসংসদের নেতাদের। যেহেতু ছাত্রসংসদ নেই তাই এ অর্থ ব্যবহার করছেন হল সুপার বা তিনি যাদেরকে নিয়ে কাজ করেন তারা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা