২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অস্ত্র সরবরাহকারী আশেক-মকছুদ বহাল তবিয়তে

কক্সবাজারে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান দমাতে হামলা
-


কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক ও মহেশখালী পৌরসভার অপসারিত মেয়র মকছুদ মিয়া বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হলেও এখনো রয়ে গেছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তারাসহ আরো কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের হাতে ১৬ বছর ধরে জিম্মি ছিল কক্সবাজারের মানুষ। এসব চিহ্নিত ক্ষমতাধরদের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নের নামে চলেছে ব্যাপক লুটপাট। মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে লুটপাট ছাড়াও হোটেল ও মদের বার দখল, টেন্ডারবাজি, অস্ত্রবাজিসহ ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এ ছাড়াও উপকূলীয় প্যরাবন নিধন করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ, সরকারি মৎস্য অবতরন কেন্দ্রকে টর্চার সেল বানানো, উপজেলা ও জেলা প্রশাসনসহ পুলিশকে পোষা বাহিনীর মত ব্যবহার এবং বিচারিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপসহ নানা অপরাধ কর্মকা- চালিয়েছে তারা।
একাধিক সমন্বয়কসহ ভুক্তভোগীরা জানান, ১ আগস্ট থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত আশেক উল্লাহ এবং মকছুদ মিয়ার নেতৃত্বে আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ভারী অস্ত্র কিনে পুরো জেলার ছাত্র জনতার আন্দোলন দমাতে জেলা পুলিশের সিনিয়র কয়েকজন কর্মকর্তার সামনেই অস্ত্রগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। এতে একজন শিক্ষার্থী নিহত এবং শতাধিক ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়।
সূত্রে প্রকাশ, বিদেশী রিভলভার, অত্যাধুনিক স্নাইপার রাইফেল ও শটগানসহ মারাত্মক মরণাস্ত্র আনতে অর্থায়ন করেন আশেক উল্লাহর ব্যবসায়িক পার্টনার আইয়ুব খান ও গিয়াসউদ্দিনসহ একাধিক ব্যক্তি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আইয়ুব খান বলেন, ২০০১ সাল থেকে তিনি বৈধভাবে আশেক উল্লাহর সাথে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করেছেন।

কুতুবদিয়া নাগরিক ঐক্য পরিষদের সচিব জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী দুঃশাসনের দোসর আশেক উল্লাহ রফিকের অর্থ যোগানদাতা ছিলেন ঠিকাদার আয়ুব। এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক ইউসুফ বদরী জানান, ৪ আগস্ট কক্সবাজারে যে ভয়ঙ্কর অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে তা উদ্ধার করা খুবই জরুরি।
২০১৪ সাল থেকে মহেশখালী দ্বীপের ফেরিঘাট জেলা প্রশাসন এবং আশেক, মকসুদ অবৈধভাবে খাস কালেকশনের নামে উপজেলার ৫ লাখ জনগণকে জিম্মি করে জুলুম অবিচারের মধ্যে রেখেছিলেন। এছাড়াও মিয়ানমার থেকে মকসুদের ফিশিং ট্রলারযোগে ইয়াবা কারবার ও চোরাচালান ছিল।
মপি আশেকের সেকেন্ড ইন কমান্ড মেয়র মকছুদের নেতৃত্বে রয়েছে একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী। তার ক্যাশিয়ার ও পার্টনার ছিলেন মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের সেই দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার শাহাদাত হোসেনসহ আরো কয়েকজন। তাদের রয়েছে মহেশখালীতে আলিশান বাড়ি, কক্সবাজারে ফ্ল্যাট, ঢাকায় ফ্ল্যাট বাড়িসহ বিদেশে টাকা পাচার উল্লেখ্যযোগ্য।

এ বিষয়ে মাতারবাড়ি প্রকল্পের প্রধান পার্টনার শাহাদাত হোসেনের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দেশের বাহিরে এবং এ বিষয়ে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। স্থানীয়রা জানান, গেল ৪ বছর আগে মকসুদের বড় ছেলে ঢাকায় বড় একটি ইয়াবা চালানসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে মকসুদের ছেলের ১৪ বছরের সাজা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমজাদ হোসেন জানান, ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। সরকার পতনের পর আশেক-মকছুদ মালয়েশিয়ায় চলে গেছেন বলে প্রচার করছেন তাদের পোষা দালালরা। কিন্তু অনেকে বলেছেন পৌর মেয়র মকসুদ ও এমপি আশেক মহেশখালীর দুর্গম এলাকায় লুকিয়ে আছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement