২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

জৈন্তাপুর সীমান্ত ও নদীগুলো থেকে বন্ধ হচ্ছে না চাঁদা উত্তোলন

জৈন্তাপুরে বালুমহাল থেকে অবাধে চলছে চাঁদাবাজি : নয়া দিগন্ত -


ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সরকারের পরিবর্তন ঘটলেও সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অবৈধভাবে বিভিন্ন মহাল থেকে বালু উত্তলন বন্ধ হয়নি। সেই সাথে বন্ধ হয়নি শ্রীপুর, রাংপানি নদীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদা উত্তোলন ও সীমান্ত চোরাচালানি। এ সুযোগে সীমান্ত এলাকাসহ বালু ও পাথর কোয়ারিতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য চাঁদাবাজ চক্র। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ব্যবহার করে ওই চক্রগুলো অবৈধ কারবারিদের কাছ থেকে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

সরকার পরিবর্তনের পর জৈন্তাপুরের মানুষ প্রত্যাশা করেছিল এবার হয়তো চোরাকারবারি, চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের দৌরাত্ম্যের অবসান ঘটবে। অবশ্য পটপরিবর্তনের পর কিছুদিন মানুষ একটু স্বস্তিতে থাকলেও আবার এসব স্থানে নতুন করে চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের আবির্ভাব ঘটেছে। পূর্বের চাঁদাবাজরাও নতুনদের সাথে যুক্ত হয়ে দ্বিগুণ উৎসবে চাঁদাবাজি শুরু করেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁদাবাজদের সবচেয়ে বড় টার্গেট পয়েন্ট হচ্ছে বালুমহাল, পাথর কোয়ারি ও গরু-মহিষের হাট। সপ্তাহে দুই দিন হাট বসার কথা থাকলেও অবৈধ পথে ভারত থেকে আসা গরু মহিষের বৈধতা দিতে প্রতিদিনই হাট বসে। বাজার ইজারাদারদের দেয়া ছাড়পত্রের কারণে চোরাই গরু-মহিষ হয়ে যায় বৈধ। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের টানা ১৫ বছরে চাঁদাবাজ ও দখলবাজরা হয়ে উঠেছে কোটি কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালালেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে তাদেরও রাজনৈতিক পরিচয়েরও পরিবর্তন ঘটে যায় রাতারাতি। পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েও তেমন কাজ হচ্ছে না বলে জানা যায়।

জৈন্তাপুর সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার ভারতীয় মোবাইল ফোন, কিট, গরু-মহিষ, চিনি, কসমেটিক্স, শাড়ি, লেহেঙ্গা, মদ, ইয়াবা, ফেনসিডিল, সুপারি, বিভিন্ন ব্যান্ডের মাদকসহ নানা অবৈধ দ্রব্য এবং নেশাজাতীয় ওষুধসামগ্রী, মটরসাইকেল, হাসপাতালের বিভিন্ন সরঞ্জাম অবৈধ পথে সীমান্ত পার হয়ে আসছে। এসব চোরাইপণ্য নির্বিঘেœ ভারত থেকে আনতে সহযোগিতা করছে কিছু অসাধু ব্যক্তি। তারা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলের নাম ভাঙিয়ে আদায় করছে চাঁদা। সেই টাকা পরে বণ্টন হয়ে যায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার কাছে।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি আবুল বাশার মো: বদরুজ্জামান বলেন, চোরাচালান, চাঁদবাজিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কাজ করছে। আর কোয়ারির বিষয়টি আমার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। কারণ এ থানায় আমি সদ্য এসেছি।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে শালিক রুমাইয়া বলেন, চোরচালান, বালু মহাল ও পাথর কোয়ারির বিষয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। দেশে নতুন সরকার আসার পর পুলিশ অনেক দিন নিষ্ক্রিয় ছিল, বর্তমানে তারা সয়ংক্রিয় হয়েছে। বর্তমানে দুর্গাপূজার কারণে প্রশাসন ব্যস্ত। তবে চোরাচালান, কোয়ারি, চাঁদাবাজি বন্ধে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement