ফুলবাড়ীতে আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াইয়ের ধুম

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। বাড়তি লাভ হিসেবে এবং স্বল্পমেয়াদি এই আমন ধানের আবাদ করে তারা আশানুরূপ ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় তাদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক। এ ধানের কাঁচা খড় গোখাদ্য হিসেবে বেশ দামি। এ কারণে বাড়তি লাভ হিসেবে এই খড় বিক্রি করেও তারা সন্তুষ্ট।
সরেজমিন দেখা যায়, আগাম জাতের নতুন ধান ঘরে তুলে নবান্ন উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে গ্রামে গ্রামে। এ এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ সারা বছরই সবুজে ভরা থাকে। জমিগুলোতে তিন থেকে চারটি ফসল হওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অধিদফকর সূত্র জানায়, এবার এ উপজেলায় দুই হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৩২৫ মেট্রিকটন আগাম জাতের আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি এসব ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় গড়ে তিন দশমিক চার থেকে তিন দশমিক ছয় টন।
আগাম জাতের ধান রয়েছে হাইব্রিড ও উপশি জাতের তেজগোল্ড, ব্রি-৯০, বিনা-১৭, সম্পাকাটারি, জাঁপাড়ি, ধানিগোল্ড ইত্যাদি। উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রাজারামপুর, গোপালপুর, জাফরপুর, পলিশিবনগর, শমসেরনগর, কয়রাকোল এলাকায় এই আগাম জাতের ধান সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়েছে।

শিবনগর ইউনিয়নসহ আরো কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কেউ ধান কাটছেন, কেউ ধান কেটে কাঁধে করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ মাড়াই করে বস্তায় ভরছেন। অনেকে ধান কাটার পর আগাম আলুসহ শীতকালীন রবিশস্য চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। এ জন্য মাঠে মাঠে কিষান-কিষানিদের চরম ব্যস্ততা। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের।
অগ্রহায়ণ নয়, নিষ্ফলা আশ্বিনে মঙ্গাজয়ী আগাম জাতের ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো বাজার মূল্য কৃষক পরিবারে এনেছে সমৃদ্ধির হাসি। ধানের পাশাপাশি গোখাদ্যের জন্য কাঁচা খড়ের রমরমা ব্যবসা চলছে এখানে। বাজারে ধানের দামের সঙ্গে খড়ের উচ্চমূল্য পেয়ে বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষকরা। এ বাড়তি আয়ে আলুসহ অন্য রবি ফসল চাষে খরচ মেটাবেন তারা।
স্থানীয় কৃষক ওয়াহেদুল চৌধুরী বলেন, এক সময় আগাম আলু চাষের জন্য জমি ফেলে রাখা হতো। এখন আগাম জাতের ধান আবিষ্কার হওয়ায় জমি ফেলে রাখা হয় না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছেন চাষিরা।