০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত

তিন শতাধিক ছররা গুলি নিয়ে কাতরাচ্ছেন সাহেদুল

তিন শতাধিক ছররা গুলি নিয়ে কাতরাচ্ছেন সাহেদুল -


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে বাম চোখ হারিয়েছে সাহেদুল ইসলাম। মাথা, মুখে ও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে তিন শতাধিক ছররা গুলি লেগেছিল। ৫ আগস্টের পর সিএমএইচসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিলেও এসব গুলি এখনো শরীরে রয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ-সাহেদুলকে দেশের বাইরে নিয়ে গুলি বের করতে হবে। অর্থাভাবে সেটি সম্ভব না হওয়ায় চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে তার পরিবার।
ফেনীর ছাগলনাইয়া পৌরসভার দক্ষিণ যশপুর ওয়ার্ডের মির্জাপাড়ার বাসিন্দা সাহেদুল ইসলাম। দুই ভাই-দুই বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। বাবা নুর আলম অ্যাজমা ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছেন বহু আগে। বড় ভাই তৌহিদুল ইসলামের আয়ে সংসার চলে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় পরিবারের খরচ চালানোর পাশাপাশি সাহেদুলের চিকিৎসার খরচে টানাপোড়েন দেখা দেয়।
পরিবার সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট ছাগলনাইয়া পৌর শহরে আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার সাথে অংশ নেয় সাহেদুল ইসলাম। সংঘর্ষ বেধে গেলে ছুটোছুটির সময় পড়ে যায়। মাথা তুলে দাঁড়ানোর সময় চোখ, মুখ, মাথা ও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ছররা গুলি লাগে। এরপর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতাল, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেয়া হয়।

সাহেদুলের বোন ফাহিমা আক্তার নয়া দিগন্তকে জানান, পাহাড়তলী চক্ষু হাপসাতালে অপারেশনে বাম চোখ নষ্ট হওয়ার কথা জানালেও চিকিৎসকরা গুলি বের করতে পারেননি। তার বাম চোখে এখনো দুটি গুলি রয়েছে। এছাড়া মাথায় ১৯৪টি, দুই হাতে শতাধিক, বুকে তিন-চারটাসহ তিনশতাধিক গুলি লাগে।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ফাহিমা আরো জানান, সিএমএইচ থেকে এক সপ্তাহের ছুটি দেয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা সাহেদুলকে নিয়ে বাড়ি এসেছেন। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী পুনরায় সিএমএইচএ নেয়া হবে। দেশে চিকিৎসা অনুযায়ী তার শরীর থেকে গুলি বের করতে গেলে ব্রেন এমনকি জীবনের ঝুঁিক রয়েছে। তার সুচিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত থাইল্যান্ড নেয়া প্রয়োজন। শুরুর দিকে সরকারিভাবে জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে এক লাখ টাকা পেলেও ইতোমধ্যে ধারদেনা করে আড়াই লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা চালানো হয়েছে। বাকি চিকিৎসা কীভাবে চলবে এনিয়ে তার পরিবার দিশেহারা বলেও জানান ফাহিমা।
সাহেদুলের বাবা নুর আলম নয়া দিগন্তকে জানান, চিকিৎসা করানোর জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। সরকারি সহযোগিতা পেলে দেশের বাইরে নিয়ে ছেলের উন্নত চিকিৎসা করানো যেত।

 


আরো সংবাদ



premium cement