০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

চৌগাছায় ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ

চৌগাছায় ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ -


যশোরের চৌগাছায় গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগকে আঞ্চলিক ভাষায় পক্স বলা হয়। এ রোগ নিরাময়ে গরুর খামারি ও মালিকরা ব্যাপক দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কাজ হচ্ছে না ওষুধে মারা গেছে অর্ধশত গরু। অনেকে কবিরাজের ঝাড়ফুঁকের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ছে। উপজেলার ফুলসারা, সিংহঝুলী, পাশাপোল, ধুলিয়ানী, হাকিমপুর, জগদিশপুর, পাতিবিলা, নারায়ণপুর, সুখপুকুরিয়া, স্বরূপদাহ ইউনিয়ন ও পৌর এলাকাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরুর এ রোগ দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রাণিস¤পদ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় গরু পালন ফার্ম রয়েছে ১২০টি। গরু রয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ২৮৭টি। লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসায় এখনও পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি। তবে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে কোন খামারি এন্টি লাম্পি স্কিন ভ্যাকসিন ব্যবহার করলে এ রোগ আর হবে না। এ রোগ সারতে যারা কবিরাজি চিকিৎসার পাশাপাশি নিম নিশিন্দার পাতা জড়িয়ে ভালো করার চেষ্টা করছেন তারা ভুল করছেন। আক্রান্ত গরু প্রাণিস¤পদ অফিসের পরামর্শে চিকিৎসা করানো উচিত। দ্রুত চিকিৎসা না করালে আক্রান্ত গরু-বাছুরের মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে।

উপজেলার বেড়গবিন্দপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামের এ রোগে অনন্ত ১০টি গরু মারা গেছে। গেল বুধবার আমার একটি বাছুর মারা গেছে।
পৌর শহরের আমির হোসেন বাবু বলেন, তার একটি গাভি ও একটি বাছুর লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বাছুরটি প্রায় ২০ দিন আক্রান্ত হয়েছে। ডাক্তারি চিকিৎসা নিয়েও কোন কাজ হয়নি। গাভিটিও ১০দিন আক্রান্ত হয়ে রয়েছে। বাছুরটির হাঁটু ফুলে এখন রক্ত ঝরা শুরু হয়েছে। ওষুধে কাজ না হওয়ায় এখন কবিরাজি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গরু দুটি খুবই দুর্বল হয়ে গেছে।
উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের কবির হোসেন বলেন, চিকিৎসা দিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় গরুর মালিকরা কবিরাজের ঝাড়ফুঁকের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ছেন। ঝাড়ফুঁকের পাশাপাশি নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ একসাথে বেটে রস খাওয়ানো হচ্ছে। অনেকে আক্রান্ত গরুর গায়ে নিমপাতাও বেঁধে রাখছেন।
পল্লী পশুচিকিৎসক হাজরাখানা গ্রামের আসাদ হোসেন বলেন, গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ রোধে চৌগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য হাটবাজারে মাইকিংসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এ রোগ রোধে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

পৌর এলাকার পল্লী প্রাণিচিকিৎসক পিন্টু রেজা বলেন, এ রোগে গেল কয়েক দিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় অর্ধশত গরু মারা গেছে। বেলেমাঠ গ্রামের কবিরাজ শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি এ রোগে আক্রান্ত গরুর ঝাড়ফুঁকের পাশাপাশি নিমপাতা ও কাঁচাহলুদ একসাথে বেটে রস খাওয়ানোর মাধ্যমে চিকিৎসা দেন। তিনি সম্প্রতি এভাবে এ রোগের চিকিৎসা দিয়েছেন। তার দাবি, এ চিকিৎসায় গরু ভালো হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আনোয়ারুল করিম বলেন, এ রোগে আক্রান্ত প্রতিদিন ৭-৮টি গরু উপজেলা প্রাণিস¤পদ অফিসে চিকিৎসা নিতে আনা হয়। লাম্পি স্কিন ডিজিজ জাতীয় রোগ মশা-মাছি থেকে ছড়ায়। এ রোগের এখনো পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি তাই আক্রান্ত গরুর কোন ওষুধে কাজ হচ্ছে না। আক্রান্ত গরু ভালো হতে অনেক সময় লাগে। সাধারণ চিকিৎসা দিয়েই আক্রান্ত গরু ভালো করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement