৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১, ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

যশোরে ভৈরব নদে ধসে যাচ্ছে বাড়িঘর

যশোরের পুরাতন কসবা এলাকায় ভৈরব নদে এভাবেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি : নয়া দিগন্ত -

অবৈধ এবং অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকায় ভৈরব নদের পাড়ের বাড়িঘর বিলীন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৫-২০ ঘরবাড়ি নদের গর্ভে ধসে পড়েছে। দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদের পাড়ে বসবাসকারী শ’ শ’ পরিবার। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ রোববার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে দেখা করেছেন।
ধসে যাওয়া বাড়িঘরের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জানান, জোয়ার-ভাটাবিহীন ভৈরব নদের পাড় ধসে ১৫-২০টি বাড়ি ইতিমধ্যে নদে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া, নদের পাশে বসবাসকারী শতাধিক ব্যক্তির বাড়ির জায়গা, গাছপালা ভেঙে বিশাল খাদের সৃষ্টি হয়েছে।
ভৈরব নদের পাড়ে বসবাসকারী অসহায় এসব মানুষ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জীর কাছে তাদের অসহায়ত্ত তুলে ধরেন। তারা জানিয়েছেন, নদের পাড়ে বাঁধ দেয়া না হলে এখনও যতটুকু আছে, সেটুকুও বিলীন হয়ে যাবে। অসহায় এসব মানুষ তাদের আশ্রয়টুকু রক্ষার দাবি জানিয়েছেন পাউবো কর্মকর্তাদের কাছে।

নিজের বসতবাড়ি রক্ষা করতে কাজকর্ম ফেলে রোববার পানি উন্নয়ন বোর্ডে হাজির হন পুরাতন কসবা ঘোষপাড়ার ভৈরব পাড়ের বাসিন্দা সায়েমা রহমান, শওকত আলী, সজীব ইসলাম, শামীমা জামান, শফিকুল ইসলাম, গৌতম রায়, রাফিয়া আক্তার মৌসুমী, খায়রুল ইসলামসহ অনেকেই।
তারা জানান, ইতোমধ্যে ঘোষপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন, বারিক আলী, সজীব ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আমেনা বেগম, গোলাম মোস্তফা, সিদ্দিক হোসেন, কোহিনুর বেগম, মোহাম্মদ শাহিন, আলমগীরসহ কমপক্ষে ২০ জনের ঘরবাড়ি নদের মধ্যে ধসে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো শতাধিক বাড়িঘর।
ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, তাদের বসতভিটা রক্ষায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নদের পাড়ে বাঁধ দেয়া হোক। স্থায়ী সমাধানের জন্য ইতিমধ্যে তারা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। তিনি তাদের আশ্বস্ত করেছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, আমরা খুব শিগগিরই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। জিও ব্যাগের মাধ্যমে আপাতত পাড় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা করা হবে। আগামী বর্ষা মৌসুম আসার আগেই আমরা আরো কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যায়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করবো।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ভৈরব খননের সময় তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী লোক ওই স্থানে মেশিন লাগিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে। তারা ওই সময় হাজার হাজার ট্রাক বালি উত্তোলন করায় ভৈরবের এলাকায় ব্যাপক ভ্যাকুয়ামের সৃষ্টি হয়। এ কারণে গত বছরের বৃষ্টিতে নদের পাড়ে ভাঙন শুরু হয়। তখন স্থানীয়রা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালেও তারা পাত্তা দেয়নি। এ বছর লাগাতার বৃষ্টির কারণে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement