২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

যান্ত্রিক যুগেও গরু দিয়ে হাল চাষ

গরু দিয়ে জমি চাষ করছেন নওদাবশ গ্রামের ছান্টু চন্দ্র : নয়া দিগন্ত -

শস্যশ্যামল ফসলে ভরা বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের পেশা কৃষি। কৃষির ওপর নির্ভর করেই চলে এ দেশের অর্থনীতি। কৃষি প্রধান বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে রয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঙল-জোয়াল, মই, গরু ও মহিষ। কৃষকের কাঁধে লাঙল-জোয়াল, হাতে জোড়া গরুর দড়ি ও লড়ি। এখন আর অতীতের এই চিত্র খুব একটা দেখা না গেলেও অল্প পরিসরে টিকে আছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায়। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এবং যান্ত্রিক আধিপত্যের কারণে পাল্টে গেছে বাংলার চিরাচরিত গরু দিয়ে হাল চাষ করার চিত্র।

দেশের উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড় ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে ঘুরে দেখা যায় নওদাবশ গ্রামের ছান্টু চন্দ্র এবং আফজাল হোসেন গরু দিয়ে হাল চাষ করছেন। এই দুই প্রবীণ কৃষক জানান, জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে তাদের লাঙল-জোয়াল আর গরুর পালের সাথে। ছোটবেলা থেকেই হাল চাষের কাজ করছি। গরু দিয়ে হাল চাষ করলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়, আগাছা কম জন্মে। ফসল ফলে ভালো।
রাবাইতারী গ্রামের কৃষক জোবেদ মিয়া জানান, তাদের বাড়িতে এক সময় হালচাষ করার জন্য সাত-আটটি গরু ছিল। গরুগুলো ছিল যেন পরিবারের একেক জন সদস্যের মতো।

সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রথফিকুল ইসলাম জানান, আগে হাল চাষের মৌসুমে তাদের কদর ছিল অনেক। কাকডাকা ভোরে কৃষকরা গরু, লাঙল, জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে যেত মাঠে হালচাষ করার জন্য। কিন্তু বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে গরু দিয়ে হাল চাষ এখন বিলুপ্তির পথে।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, গরু দিয়ে হাল চাষ আমাদের দেশের ঐতিহ্য। কিন্তু বর্তমানে সময়ের মূল্যটাকেই মানুষ বেশি বিবেচনায় নেন। গরু দিয়ে চাষ করতে গেলে সময় বেশি লাগে, খরচও বেশি পড়ে যায়। সে কারণে গরু দিয়ে হাল চাষ দিন দিন কমে যাচ্ছে। কৃষকেরা যান্ত্রিক চাষাবাদের দিকেই ঝুঁকে পড়ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement