বৃষ্টিতে সবজি ও মাছের ব্যাপক ক্ষতি

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় বৃষ্টিতে সবজি ও মাছের প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কৃষক। ভারী বর্ষণের পর যতদিন যাচ্ছে সবজির ক্ষতির পরিমাণ তত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিফাত-আল-মারুফ ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে চাষিদের দাবি ক্ষয়ক্ষতির এ পরিমাণ আরো অনেক বেশি। এ ক্ষতির কারণে ঋণগ্রস্থ কৃষকেরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিফাত-আল-মারুফ জানান, এই উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে। এখানের মোট আবাদি জমির পরিমাণ ৩৫ হাজার একরের বেশী। গত তিন দিনের ভারী বর্ষণে এখানে ধান, পান, টমেটো, বরবটি, মিষ্টিকুমড়াসহ বিভিন্ন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক হিসেবে ১৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ক্ষতির হিসাব পাওয়া গেছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে।
চিতলমারী সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদুল্লাহ জানান, এ উপজেলায় ১৬ হাজার মৎস্য ঘের ও ৬ হাজার ৯৫৮টি পুকুর রয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৫০০ ঘেরে বাগদা এবং ১৩ হাজার ৫০০ ঘেরে গলদা চিংড়ির চাষ হয়। মাছ চাষিরা উভয় ঘের ও পুকুরে চিংড়ি মাছের সাথে সাদা মাছের চাষ করেন। চাষিরা বছরে ৫ হাজার মেট্রিকটন গলদা চিংড়ি, ৩ হাজার মেট্রিকটন সাদা মাছ ও ৪০০ মেট্রিকটন বাগদা চিংড়ি উৎপাদন করে থাকেন। গত তিন দিনের অতি বৃষ্টিতে এ উপজেলার সাড়ে ৫ হাজার চিংড়ি ঘের ও ৩০০ পুকুর ভেসে গেছে। এতে চাষিদের কমপক্ষে এক কোটি ২১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উমাজুড়ি গ্রামের মাছ চাষি স্বপন মণ্ডল, কুরমুনি গ্রামের সবজি চাষি হৃদয় বসু বুদ্ধ, শ্যামপাড়া গ্রামের প্রকাশ মাঝি, মৃনাল বৈরাগী, প্রদীপ বৈরাগী, শ্রীরামপুর গ্রামের তাপস ভক্ত, পারডুমুরিয়ার উত্তম বাড়ৈ ও দুর্গাপুর গ্রামের অরুণ সরকারসহ অনেক চাষি বলেন, তিনদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে আমাদের ঘেরগুলো তলিয়ে গেছে। নেটজাল ও পাটা দিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারিনি। আমরা এখন দেনার দায়ে জর্জরিত। দেনা পরিশোধ কিভাবে করব সে চিন্তা ঘুম নেই।