২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

সিলেটে সাদাপাথরে আ’লীগের চাঁদাবাজি অব্যাহত

সাদাপাথরের পর্যটন স্পট : ফাইল ফটো -

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতন ও শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও সিলেটের পর্যটন স্পট সাদাপাথরে এখনো রয়ে গেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েও চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সব দফতরে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ দিলেও দৃশ্যত কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ভোলাগঞ্জের সাদাপাথরে শুরু থেকেই দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে ভোলাগঞ্জ গ্রামের আলমগীর হোসেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও আলমগীর হোসেন আগের মতোই চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত শুক্রবার সাদাপাথরের এক পর্যটন ব্যবসায়ী চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ওই ব্যবসায়ীকে মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়াও সাদাপাথর লুটপাট করায় গত মঙ্গলবার পুলিশ বাদি হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করে।
এসব ঘটনায় গত মঙ্গলবার সাদাপাথর পর্যটনের ব্যবসায়ীরা আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানার নিকট একটি অভিযোগপত্র দেন। এ সময় চাঁদাবাজমুক্ত করে ব্যবসার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ইউএনওর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাদাপাথর পর্যটন এলাকার সরকারি খাস জমি থেকে দীর্ঘদিন ধরে ভোলাগঞ্জ গ্রামের আলমগীর হোসেন ও তার দলবল চাঁদাবাজি করে আসছে। ভোলাগঞ্জ সাদাপাথরে সরকারি জায়গায় নির্মিত প্রতিটি দোকান থেকে দুই-চার হাজার টাকা করে চাঁদা নেন তারা। ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর এলাকার বোল্ডার পাথর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রতিদিন পাঁচ হাজার টাকা এবং এ পাথর বহনকারী ট্রাকের আকার ভেদে দুই-তিন হাজার টাকা করে চাঁদা নেন।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির রাজত্ব তৈরি করা আলমগীরের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই মামলা-হামলা কিংবা মারধরের শিকার হতে হয়। গত চার বছর ধরে তিনি পর্যটন ব্যবসায়ীদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনি চাঁদা আদায় করেন। সরকার পতনের পর সরকারি খাস জমিতে আর চাঁদা দেবে না বলে প্রতিবাদ করলে আলমগীরের দলবল পর্যটনের ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা চালায়।
চাঁদা না দেয়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাদাপাথর পর্যটন এলাকার বন্ধু কসমেটিক্স শপের ব্যবসায়ী ও সাদাপাথর ব্যবসায়ী সমিতির দফতর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খোকনের ওপর হামলা ও তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও তাকে আহত করে আলমগীরের দলবল। এ ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম বাদি হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগেও তিনি তার দলবল নিয়ে পর্যটন এলাকার দোকানপাট ভাঙচুর করে।
চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনের ফোনে কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সাদাপাথর পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সফাত উল্লাহ জানান, ব্যবসায়ীকে মারধরের বিষয়টি ইউএনওকে লিখিত জানিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি বদিউজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় আমরা জড়িতকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছি। তদন্ত করছি এখানে কারা চাঁদাবাজি করে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানা জানান, পর্যটনের দোকানপাটগুলো সরকারি জায়গায়। এখান থেকে চাঁদাবাজি করার সুযোগ নেই।


আরো সংবাদ



premium cement