২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

কুষ্টিয়ায় পদ্মায় বিলীন হলো জাতীয় গ্রিডের সেই সঞ্চালন টাওয়ার

-

কুষ্টিয়ার মিরপুরে অবশেষে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হলো জাতীয় গ্রিডের সেই বিদ্যুৎ সঞ্চালন টাওয়ার। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়রা বিকট শব্দে উপজেলার সাহেব নগর গ্রামের ৩২ নং টাওয়ারটি পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়তে দেখেন। এনিয়ে গতকাল নয়া দিগন্তে ‘মহাসড়ক ও জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন খুঁটি ঝুঁকিতে’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এদিকে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সঞ্চালন টাওয়ার ভেঙে পড়ার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পদ্মার ভাঙন রোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে কুষ্টিয়া-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বাপ্পী, মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিরপুর-ভেড়ামারা) সার্কেল আব্দুল খালেক, মিরপুর উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বেলাল খান।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পদ্মার ভাঙনরোধে জরুরিভিত্তিতে অতিরিক্ত বালু ও জিও ব্যাগ ফেলা এবং সদ্য আহ্বান টেন্ডারের কাজ আগামী শুকনো মৌসুমে শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিলে এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নেন।
পদ্মার ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অপু জানান, এলাকাবাসীর আশঙ্কা ছিল টাওয়ার ভেঙে নদীতে চলে যাবে, ঠিক তাই হলো। আরো কয়েকটি টাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
কুষ্টিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, সাহেবনগর বেড়িবাঁধসহ ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ও টিউব ব্যাগ ফেলার কাজ চালু থাকা অবস্থায় টাওয়ারটি ভেঙে যায়। তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে আহ্বান করা টেন্ডার অনুযায়ী আগামী শুষ্ক মৌসুমে এই নদী রক্ষার কাজ শুরু করা হবে।
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয়দের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা জানি আপনারা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। আমরা আপানদের পাশে সার্বক্ষণিক আছি। আশা করছি শিগগিরই এ পরিস্থিতি থেকে আমরা মুক্ত হতে পারব।’ পরে তিনি কুষ্টিয়া সেনা ক্যাম্পে স্থানীয় নদী রক্ষা কমিটির নেতাদের ডেকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হন। এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু সমাধানের বিষয়ে আশ^াস দেন সেনা ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. কর্নেল মাহবুবুর রহমান।
কুষ্টিয়ার বটতৈল গ্রিডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব নয়া দিগন্তকে জানান, নদীভাঙনের আশঙ্কায় আমরা কয়েকদিন আগে থেকেই ওই লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রেখেছিলাম। এ লাইনে ভেড়ামারা থেকে ফরিদপুর গ্রিডের বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হতো। নদীতে বিদ্যুতের টাওয়ার ভেঙ্গে পড়ায় সঞ্চালন কাজে কোনো সমস্যা হবে না। সর্বত্র বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।
উল্লেখ্য, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫০০ মিটার গ্রোয়েন (বাঁধ) পদ্মার নদীর মধ্যে রয়েছে। সেখানে পানি প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় অপর পাড় কুষ্টিয়ার সাহেবনগর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement