২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা : অস্ট্রেলিয়ায় পর্ন সাইটেও নজরদারি

নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা : অস্ট্রেলিয়ায় পর্ন সাইটেও নজরদারি - ছবি : সংগৃহীত

প্রায় ১০০ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার বিনিয়োগ করে দেশে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ঠেকাতে চায় অস্ট্রেলিয়া। ইন্টারনেটে সহিংস আচরণ ও পর্নোগ্রাফিতেও নজরদারি বাড়াবে তারা৷

অস্ট্রেলিয়ার সরকার বলছে, দেশটিতে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বর্তমানে ‘জাতীয় সঙ্কটে' পরিণত হয়েছে৷ পারিবারিক সহিংসতার শিকার যারা, তাদের জন্য প্রায় এক বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ করবে সরকার৷

শনিবার নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতিবাদে অস্ট্রেলিয়ার রাজপথে নামেন কয়েক হাজার মানুষ৷

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে এ বছর প্রতি চার দিনে এক নারী প্রাণ হারিয়েছেন সহিংসতার কারণে৷

এপ্রিল মাসে একটি ছুরিকাঘাতের ঘটনায় মারা যান পাঁচ নারী৷ একই মাসে আরেকটি আলোচিত ঘটনা থেকে উঠে আসে দেশের পার্লামেন্টের ভেতর ঘটে যাওয়া একটি ধর্ষণের খবরও৷

সমাধানের যে পথ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় ও আঞ্চলিক নেতৃত্বের সাথে একটি জরুরি বৈঠকের পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যানথনি অ্যালবানিজ পারিবারিক সহিংসতা থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়া মানুষদের জন্য স্থায়ী অর্থ সাহায্য ঘোষণা করেন৷

তিনি জানান, এই খাতে সরকার ৯২৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার ব্যয় করবে৷

অ্যালবানিজ বলেন, ‘দেশ হিসেবে, সমাজ হিসেবে আমরা কেমন, সেটাই আজ গুরুত্বপূর্ণ৷ এটা শুধু সরকারের নয়, গোটা সমাজের জন্যই একটা বিষয়৷ এটা সুশীল সমাজের বিষয়, গণমাধ্যমের বিষয়, সবার জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ এটা।’

ইন্টারনেটেও কড়াকড়ি
নতুন আইন প্রণয়ন করে পর্নোগ্রাফিতে ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহার ও অংশগ্রহণকারীদের সম্মতি ছাড়া পর্নছবি বানানো নিষিদ্ধ করবে অস্ট্রেলিয়া৷ ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি ভিডিওতে আরেকজনের চেহারা বসানো যায়৷

২০২২ সালের জুন মাস থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত, নিজের সঙ্গীর হাতে খুন হন ৩৪ জন নারী, যা এর আগের বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি৷ গোটা দেশে একই সময়ে খুনের হার বেড়েছে চার শতাংশ৷

এছাড়া ইন্টারনেটে ‘ক্ষতিকর ও চরমপন্থী পুরুষালী’ আচরণের সমালোচনা করে অ্যালবানিজ ইন্টারনেটে পর্ন ব্যবহারে কড়াকড়ি বাড়ানোর কথা বলেন৷ সাথে ডিজিটাল দুনিয়ায় নারীর প্রতি সুআচরণ বজায় রাখতেও উৎসাহিত করেন তিনি৷

প্রথমে সাড়ে ষাট লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার বিনিয়োগ করে একটি পাইলট প্রকল্প চালু করা হবে, যা শিশুদের ইন্টারনেটে অনুপযুক্ত কন্টেন্ট থেকে দূরে রাখবে৷ এই প্রকল্পের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে নতুন নিয়ম চালু হবে অনলাইন সংস্থাগুলোর জন্য, যেটি ঠিক করবে দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা পরিচালন সংস্থা বা ই-সেফটি কমিশনারের কার্যালয়৷

কিন্তু এই কাজ যে সহজ নয়, তার স্পষ্ট উদাহরণ সাম্প্রতিক একটি মামলা৷

অস্ট্রেলিয়ার ই-সেফটি কমিশনার বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশিত একটি পোস্ট নিয়ে আইনি মারপ্যাঁচে পড়েছেন৷ সেই পোস্টে এক পাদ্রীকে প্রার্থনা চলাকালীন ছুরিকাঘাতের ভিডিও রয়েছে৷

এক্সের তরফে ইলন মাস্ক বলেন, এই ভিডিও সরানো আসলে ‘সেন্সরশিপ' বা মতপ্রকাশে বাধা৷

প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ বলেন, ইন্টারনেট কন্টেন্টে নজরদারি যে সত্যিই কঠিন, সে বিষয়ে সরকার অবগত এবং তারা বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না৷

অ্যালবানিজ বলেন, ‘সবার জন্য উন্মুক্ত ইন্টারনেটের যে ঠিক কেমন প্রভাব পড়ে, তা ডিজিটাল সংস্থাগুলোর বুঝতে হবে।’
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement