১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

দীর্ঘ বিলম্বিত গ্যাস পাইপলাইন নিয়ে কাজ শুরু করেছে আফগানিস্তান-তুর্কমেনিস্তান

- ছবি : ভয়েস অব আমেরিকা

তালিবান শাসিত আফগানিস্তান ও প্রতিবেশী দেশ তুর্কেমেনিস্তান বুধবার থেকে আবার দীর্ঘ বিলম্বিত পাইপলাইনের কাজ শুরু করেছে। এই গ্যাস পাইপলাইনটি ভারত ও পাকিস্তান এই দুই দেশের মধ্য দিয়ে যাবে।

আনুমানিক এক হাজার কোটি ডলারের এই প্রকল্পটির নাম হচ্ছে তুর্কেমেনিস্তান-পাকিস্তান-ইন্ডিয়া বা টিএপিআই প্রকল্প যা প্রস্তাবিত ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন দিয়ে বছরে ৩ হাজার ৩০০ কোটি কিউবিক মিটার প্রাকৃতিক গ্যাস তুর্কেমেনিস্তানের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় গ্যালকিনিশ ক্ষেত্র থেকে রফতানি করবে।

বর্তমান তালিবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহ্ম্মাদ হাসান আখুন্দ তুর্কেমেনিস্তানের সীমান্ত অঞ্চল ম্যারিতে যান এবং স্বাগতিক দেশের নেতাদের সাথে যোগ দিয়ে টিএপিআই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভাগটির নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।

এই প্রকল্পটি তুর্কেমেনিস্তানের সেরহেতাবাত শহরের সাথে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের হেরাতকে সংযুক্ত করবে।

তুর্কেমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট সার্দার বেরদিমুহাম্মাদনভ এই অনুষ্ঠানে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি কেবলমাত্র অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর অর্থনীতিকে নয় গোটা অঞ্চলকে লাভবান করবে।’

তালিবান কর্তৃপক্ষ এই উপলক্ষ্যে হেরাত প্রদেশের রাজধানীতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে এবং টিএপিআই প্রকল্পের বিষয়ে গোটা সীমান্ত শহর জুড়ে পোস্টার লাগিয়ে দেয়।

জ্বালানি ঘাটতির অঞ্চল দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের জন্য টিএপিআই প্রকল্পটি প্রথমে স্বাক্ষর করা হয় ১৯৯০-এর দশকে তবে বছরের পর বছর ধরে আফগান বৈরিতার কারণে তা বারবার বিলম্বিত হয়। এই বৈরিতার পরিসমাপ্তি ঘটে ২০২১ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সকল বাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর তদানীন্তন বিদ্রোহী তালিবান ক্ষমতা পূণর্দখল করে।

যদিও বুধবার তুর্কমেন নেতারা তুর্কেমেনিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের এবং টিএপিআই প্রকল্পকে সামনে এগিয়ে নেয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেন, বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে সংশয় পোষণ করেন যে এই পাইপলাইনটি শিগগিরি কার্যক্ষম হবে। তারা এ প্রসঙ্গে অর্থায়নের বিষয়, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং আফগান নারীদের অধিকারের ওপর বিধিনিষেধ বিষয়ে তালিবানকে বৈধ সরকার হিসেব স্বীকৃতি দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অস্বীকৃতির বিষয়গুলোকে তুলে ধরেন।

নতুন দিল্লির সাথে ইসলামাবাদের ক্রমাগত কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনাও টিএপিআই প্রকল্পের বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাধা বলে মনে করা হয়।

পাকিস্তান ও ভারতের কর্মকর্তাদের মতে দু’টি দেশই রফতানিকৃত গ্যাসের ৪২ শতাংশ কেনার পরিকল্পনা করছে এবং অবশিষ্টটা পাবে আফগানিস্তান। কাবুল ট্রানজিট প্রদানের জন্য বছরে ৫০ কোটি ডলার আয় করবে।

তালিবানের প্রত্যাবর্তনের পর সন্ত্রাসবাদের উদ্বেগ নিয়ে নিয়ে আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

ইসলামাবাদের অভিযোগ হচ্ছে যে আফগান অভয়াশ্রয় থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে থাকা পাকিস্তান বিরোধী উগ্রবাদীরা যে হামলা চালায়, সেই উগ্রবাদীদের কাবুল মদদ দিয়ে থাকে। তালিবান এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।

সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement