১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তাইওয়ানে ভূমিকম্প : নিহত বেড়ে ৭

- ছবি - ইন্টারনেট

তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা সাতজনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৭৩৬ জন। ন্যাশনাল ফায়ার অ্যাজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

নিহতদের সবাই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল তাইওয়ানের পূর্ব উপকূল পাহাড়ি অঞ্চল হুয়ালিয়েন কাউন্টির বাসিন্দা।

বুধবার সকালে সাত দশমিক চার মাত্রার এই ভূমিকম্পের ফলে কেন্দ্রের সবচেয়ে কাছের শহর হুয়ালিয়েনে একাধিক ভবন ধসে পড়েছে। যেখানে উদ্ধার কাজ চলছে।

এই ভূমিকম্পের পর জাপানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভের খবর অনুযায়ী, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দূরে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এটি ২৫ বছরের মধ্যে তাইওয়ানের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৭টা ৫৮ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১৫ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার গভীরে।

ভূমিকম্পের পর চার বা এর চেয়ে বেশি মাত্রার কমপক্ষে নয়টি আফটারশকের শঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

তাইওয়ানের চিপ তৈরির বড় কোম্পানি টিএসএমসি লেছে, সিনচু ও তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলে তাদের কয়েকটি কারখানা নিরাপত্তাজনিত কারণে খালি করা হয়েছে। তবে তাদের সেফটি সিস্টেম কার্যকর রয়েছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল ও এনভিডিয়ার অন্যতম বড় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান হলো টিএসএমসি।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাজধানী তাইপেতে ভবনগুলো দুলছে, শেলফ থেকে জিনিসপত্র উড়ে যাচ্ছে এবং আসবাবপত্র তছনছ হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দেশটির পাহাড়ি এলাকায় ভূমিকম্পের কারণে ভূমিধস হচ্ছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি।

স্থানীয় গণমাধ্যমের ফুটেজে ধসে পড়া আবাসিক ভবনগুলোর ছবি দেখানো হচ্ছে এবং লোকজনকে ঘরবাড়ি ও স্কুল থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

ভূমিকম্পের কারণে যানবাহন ধ্বংস হওয়া এবং দোকানগুলোর মধ্যে জিনিসপত্র ছড়িয়ে পড়ার চিত্র প্রচার করছে স্থানীয় টেলিভিশন টিভিবিএস।

ইন্টারনেট মনিটরিং গ্রুপ নেটব্লকস ভূমিকম্পের পর পুরো দ্বীপ জুড়ে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট বিপর্যয়ের কথা জানিয়েছে।

এদিকে এই ভূমিকম্পের কারণে জাপানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে তিন মিটার পর্যন্ত সুনামি ঢেউ হতে পারে জাপান মেটেওরলজিক্যাল অ্যাজেন্সি জানিয়েছে।

পরে অবশ্য সংস্থাটি সতর্কতার মাত্রা কিছুটা কমিয়েছে। তবে এক সপ্তাহ জুড়ে ভূমিকম্প পরবর্তী আফটারশকের বিষয়ে অধিবাসীদের সতর্ক করেছে।

ভূমিকম্পের পরপরই ফিলিপিন্সের সিসমলজি অ্যাজেন্সিও একই ধরনের সুনামি সতর্কতা জারি করেছে। তারা অধিবাসীদের উঁচু খোলা জায়গায় অবস্থান নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

যদিও প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার ভূমিকম্পের দুই ঘণ্টা পর বলেছে, ‘সুনামি হুমকি কেটে গেছে’।

আর চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, দেশটির দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় ফুজিয়ান প্রদেশের কিছু অংশেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

তাইপে সিসমলজি সেন্টারের ডিরেক্টর উ চিয়েন ফু বলেন, ‘ভূমিকম্পটি ছিল স্থলভাগ এবং এর অগভীর অংশের কাছে। পুরো তাইওয়ান ও উপকূলীয় অঞ্চলে এটি অনুভূত হয়েছে। ২৫ বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী।’

এর আগে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে সাত দশমিক ছয় মাত্রার ভূমিকম্প দেশটিতে আঘাত করেছিল। তখন দুই হাজার চার শ’ মানুষ নিহত হয়েছিল। ধ্বংস হয়েছিল পাঁচ হাজারের মতো ভবন।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement