২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

তাইওয়ান প্রশ্নে তৃতীয় বিকল্পের খোঁজে ম্যাক্রোঁ

তাইওয়ান প্রশ্নে তৃতীয় বিকল্পের খোঁজে ম্যাক্রোঁ - ছবি : সংগৃহীত

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে শুক্রবার বৈঠক হয়েছে মাক্রোঁর। সেখানে তাইওয়ান নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ছাড়াও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ফন ডায়ের লাইয়েন।

বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ, রাশিয়ার অবস্থান ও তাইওয়ান নিয়ে চীনের অবস্থান নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। রোববার এ বিষয়েই ফ্রান্সের একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।

সেখানে তিনি বলেছেন, তাইওয়ান নিয়ে দুটি বিন্দুতে দাঁড়িয়ে আমেরিকা ও চীন। আমেরিকা কড়া অবস্থান নিয়েছে, অন্যদিকে চীন চরম প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। ইউরোপের এই বাইরে একটি তৃতীয় অবস্থান নেয়া উচিত। বস্তুত, সেটিকে তৃতীয় মেরু হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ম্যাক্রোঁ।

ম্যাক্রোঁর বক্তব্য, চীনের অভিযোগ, তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকা অতিরিক্ত নাক গলাচ্ছে। আবার চীন যেভাবে তাইওয়ানের সৈকতে সামরিক মহড়া শুরু করেছে, তাও গ্রহণযোগ্য নয়। ফলে ইউরোপকে একটি তৃতীয় বিকল্প খুঁজতে হবে। একটি মধ্যবর্তী অবস্থান নিতে হবে। আমেরিকার রাস্তায় হাঁটলে চলবে না।

বস্তুত, বিশ্ব রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে ম্যাক্রোঁ বলেন, একসময় ইউরোপ তার নিজের নীতি, নিজের কৌশল তৈরি করতো। গত বেশ কিছু বছরে ইউরোপ আমেরিকার কৌশল অনুসরণ করছে। এটা বদলানো দরকার। ইউরোপকে নিজের কৌশল, নিজের অবস্থান তৈরি করতে হবে এবং সেটা ইইউকে জোট বেঁধে করতে হবে। একা কোনো দেশের পক্ষে তা করা সম্ভব নয়।

কৌশলগত অবস্থানের প্রসঙ্গে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন ম্যাক্রোঁ। তার বক্তব্য, সার্বিকভাবে ইউরোপীয়দেশগুলোর সামরিক বাজেট বাড়ানো দরকার। যে পরিমাণ অস্ত্রের প্রয়োজন, সেই পরিমাণ অস্ত্রের জোগান নেই। এর ফলে ইউরোপকে অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে আমেরিকা ও এশিয়ার দেশগুলোর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে। অন্যদিকে, আমেরিকা ও চীন দ্রুত তাদের অস্ত্রের সম্ভার বাড়িয়ে চলেছে। এখানেও ইউরোপের দেশগুলো পিছিয়ে পড়ছে। এখানেও ইউরোপকে বিকল্প অবস্থান নিতে হবে।

তাহলে কি তাইওয়ান নিয়ে নাক গলাবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ম্যাক্রোঁর বক্তব্য, তাইওয়ানে শান্তি যাতে বজায় থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে ইউরোপ। কিন্তু তার বেশি কথা বলবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেমন একটি ইউনিট তেমন চীনও এক চীন নীতির উপর দাঁড়িয়ে একটি ইউনিট তৈরি করতে চাইছে। তাইওয়ান তার অংশ। ফলে সেখানে ইউরোপের নাক গলানোর কোনো জায়গা নেই।

তাইওয়ান প্রশ্নে আমেরিকা অত্যন্ত সরব। যেভাবে চীন তাইওয়ানকে গ্রাস করার চেষ্টা করছে, তার বিরোধিতা করছে আমেরিকা। সম্প্রতি তাইওয়ানের রাষ্ট্রপ্রধান আমেরিকায় গিয়ে কংগ্রেসের স্পিকারের সাথে বৈঠকও করে এসেছেন। তার পরেই তাইওয়ানের সমুদ্র সৈকতের খুব কাছে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। এই পরিস্থিতিতে ম্যাক্রোঁর এই বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement