২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

যুক্তরাষ্ট্রকে চড়া মূল্য দিতে হবে ; শান্তি আলোচনা বাতিলের পর তালেবানের হুঁশিয়ারি

যুক্তরাষ্ট্রকে চড়া মূল্য দিতে হবে ; শান্তি আলোচনা বাতিলের পর তালেবানের হুঁশিয়ারি - ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প হঠাৎ করেই তালেবানের সাথে আলোচনা বাতিল করে দিয়েছেন। এর ফলে আফগান শান্তিপ্রক্রিয়ায় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তবে তা কাবুল সরকারের জন্য স্বস্তিই এনে দিয়েছে।
আলোচনা থেকে বাদ পড়া প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির প্রশাসন শুরু থেকেই শান্তিপ্রক্রিয়ার প্রতি বিরূপ ছিল। আফগান কর্মকর্তারা আশঙ্কায় ছিলেন যে চুক্তি হলে সহিংসতা বাড়বে এবং তারা আরো নাজুক হয়ে পড়বে। আর দেশের প্রায় অর্ধেক অংশ নিয়ন্ত্রণকারী তালেবান আরো শক্তিশালী হয়ে কঠোর ধরনের ইসলামি বিধিবিধান চাপিয়ে দেবে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও গনি চুক্তিটি নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু শনিবার রাতে কয়েকটি টুইটে ট্রাম্প ঘেঅষণা করেছেন যে তিনি ক্যাম্প ডেডিডে তালেবান নেতৃবৃন্দ ও গনির মধ্যে গোপন যে আলোচনার ব্যবস্থা করেছিলেন তা বাতিল করেছেন।

গনির মুখপাত্র সেদিক সেদ্দিকি রোববার ফোনে বলেন, প্রেসিডেন্ট গানি চুক্তিটির ত্রুটিগুলো জানতেন।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে ১৮ বছর ধরে চলা আফগানিস্তান যুদ্ধ অবসানে যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছিল, তার ভবিষ্যত কী হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
তবে ওয়াশিংটনভিত্তিক উইলসন সেন্টারের উপপরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, শান্তিপ্রক্রিয়া বড় ধরনের আঘাত পেলেও তা সম্ভবত শেষ হয়ে যায়নি। ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে সরে আসতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কোনো চুক্তি না করে বরং চুক্তি করে সরে আসাটাই রাজনৈতিকভাবে তার জন্য ভালো। ফলে আলোচনা থেকে সরে আসার সম্ভাবনা কম।

গত সপ্তাহে দোহায় তালেবানের সাথে সপ্তম দফার আলোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। শীর্ষ মার্কিন আলোচক জালমি খালিলজাদ বলেছেন, শান্তিচুক্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন তারা।
আর তালেবান বলেছে, আলোচনা বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ রোববার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বলেন, আমেরিকার আলো জানমালের ক্ষতি হবে, রাজনৈতিক নিস্পত্তিতে এর ভূমিকা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে আলোচনায় যত সমঝোতার সম্ভাবনা জোরদার হচ্ছিল, তালেবান তাদের আক্রমণও তত শানিত করছিল। গত দুই সপ্তাহে তারা দেশটির উত্তর ও পশ্চিমে দুটি তিনটি নগরী (কুন্দুজ, পুল-ই—খুমরি) দখল করার চেষ্টা চালায়। এতে অনেক লোক হতাহত হয়।

তারা ২ সেপ্টেম্বর বিদেশী এনজিও ও কূটনীতিকদের জন্য নির্ধারিত আন্তর্জাতিক একটি কম্পাউন্ডের কাছে ট্রাক বোমা হামলা চালায়। এতে ১৬ জন নিহত ও অপর ১২০ জন আহত হয়। আফগান বাহিনী সেখান থেকে ৪০০ বিদেশীকে সরিয়ে নেয়। এই হামলার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে খালিলজাদ প্রেসিডেন্ট গনি ও প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাকে চুক্তির খসড়া সম্পর্কে অবগত করেন।
আফগান সরকার যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তা আফগানিস্তানে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন দূতদের কয়েকজনও প্রতিধ্বনিত করেছেন। এদের মধ্যে আছেন রিয়ান ক্রোকার, জেমস কানিংহাম ও জেমস বোডিন্স।
তারা তালেবানের সাথে সমঝোতায় আসা খসড়া চুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, এটি বর্তমান অবস্থার চেয়েও খারাপ হবে। এর ফলে আফগানিস্তানে আবার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।
ব্লুমবার্গ/এসএএম


আরো সংবাদ



premium cement