আমেরিকার সমকক্ষতা অর্জনে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে চীন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৬:৩১
আমেরিকাকে মোকাবেলার জন্য পরমাণু সক্ষমতা সম্পন্ন অত্যাধুনিক চারটি বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে চীন। ২০৩৫ সালের মধ্যে ছয়টি বিমানবাহী রণতরী পানিতে নামবে এবং এর মধ্যে চারটির পরমাণু সক্ষমতা থাকবে বলে চীনের বিশেষজ্ঞরা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে জানিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, রণতরীগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহৃত ইএমএএলএস (ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এয়ারক্রাফট লাঞ্চিং সিস্টেম) ব্যবস্থা সজ্জিত হবে। এতে ডিজেলচালিত পুরনো জাহাজের চেয়ে দ্রুত যুদ্ধবিমান পাঠানো যাবে।
বর্তমানে ‘লায়নিং’ নামে চীনে মাত্র একটি ডিজেলচালিত বিমানবাহী রণতরী রয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ২০১২ সালে ইউক্রেন থেকে অর্ধনির্মিত অবস্থায় এটি কিনেছিল চীন। এটি বিমানবাহিনীর ক্রুদের প্রশিক্ষণের জাহাজ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অবশ্য এটি আপগ্রেড করে পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করা হবে। লক্ষ্য ভারতের নিজস্ব ক্যারিয়ার নির্মাণের সাথে ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ করতে সহায়তা করা।
চীনের প্রথম বিমানবাহী রণতরী টাইপ-০০১এ এখনো সমুদ্রে পরীক্ষামূলকভাবে রয়েছে। নভেম্বরে নৌবাহিনীর ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে এপ্রিলে এটি চালু হতে পারে।
অন্যদিকে মার্কিন নৌবাহিনীর রয়েছে ১১টি পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী। এছাড়া আরো নয়টি জাহাজ আছে যেগুলো যুদ্ধের সময় রণতরী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চীনা সামরিক পরিকল্পনাকারীরা এই ফাঁকটি বন্ধ করতে আগ্রহী। এখানে অর্থ কোনো বিষয় নয়। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ উভয় অর্থনীতির ক্ষতি করছে।
চীনের সাবেক কর্মকর্তা ও নৌযুদ্ধ বিশেষজ্ঞ ওয়াং ইউনফি বলেন, ‘বেইজিংকে যুক্তরাষ্ট্রের একই স্তরের একই পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছা দরকার। অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব থাকলেও নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ যেন চলতে থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সামরিক ব্যয়কে সমন্বয় করতে পারি।’ তিনি মনে করেন, নতুন ট্যাংকের উৎপাদন কমানো সম্ভব।
হংকংভিত্তিক সামরিক বিশ্লেষক সং জংপিং বলেন, ‘চীনের প্রযুক্তি শিগগিরই মার্কিন জঙ্গিবিমান ও রণতরীর সমান হবে। কিন্তু তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এসব উন্নততর হার্ডওয়্যার শুধুমাত্র ‘ছবির অংশ’। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, চীনা সৈন্যদের প্রশিক্ষণ ও ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ প্রস্তুতির অভাব রয়েছে। কারণ চীনা সৈন্যরা আমেরিকার মতো যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করেনি।’
গোলযোগপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে কোনো কোনো দ্বীপের ওপর চীনের সার্বভৌমত্বের দাবির বিরোধিতা করছে আঞ্চলিক এক বা একাধিক দেশ। আমেরিকা এসব দেশকে সমর্থন জুগিয়ে চলেছে। জানুয়ারিতে মার্কিন নৌবাহিনী তাইওয়ান প্রণালীর মধ্য দিয়ে দু’টি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছিল যা নৌবাহিনীর অনুশীলনের স্বাধীনতা বলে অভিহিত করা হয়েছিল। পরে চীন একটি নতুন মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে। ‘গুয়াম কিলার’ হিসেবে পরিচিত এই মিসাইল মার্কিন দ্বীপের এলাকা বা প্রশান্ত মহাসাগর বা চীন সাগরের কোনো মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে আঘাত করতে সক্ষম।
সূত্র : রয়টার্স
চীন-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি
এএফপি
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। ওয়াশিংটনে তাদের মধ্যে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শুক্রবার চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ কথা জানায়। চীনা প্রতিনিধিদলের দেয়া এক বিবৃতির বরাত দিয়ে ওই বার্তা সংস্থা জানায়, উভয় পক্ষ ‘খোলামেলা, সুনির্দিষ্ট ও ফলপ্রসূভাবে’ আলোচনা করে।
বাণিজ্য বিবাদ নিরসনে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার চীনের পক্ষ থেকে প্রধান আলোচক দেশটির ভাইস প্রধানমন্ত্রী লিয়ু হে ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকপ্রধান ইয়ি গ্যাংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে পৌঁছেন। প্রতিনিধিদের দলে আরো রয়েছেন উপ-অর্থমন্ত্রী লিয়াও মিন এবং উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝেং জেগুয়াং।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৯০ দিনের শুল্ক বিরতি চুক্তির আর এক মাস অবশিষ্ট রয়েছে। গত ডিসেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিলেন। দুই পক্ষের চলমান উত্তেজনা স্থায়ীভাবে নিরসনের লক্ষ্যে আলোচনায় বসেছে প্রতিনিধিরা। বুধবার শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী আলোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও যোগ দেন।