প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে ’হারিয়ে যাওয়া পৃথিবীর’ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৪
বিজ্ঞানীরা প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে পৃথিবীর প্রাচীন ভূত্বকের অংশ আবিষ্কার করেছেন, যা কখনো কখনো ’ডুবে যাওয়া জগৎ’ নামেও পরিচিত। পৃথিবীর অভ্যন্তরের মানচিত্রায়নের নতুন পদ্ধতির বদৌলতে এ আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে।
সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, টেকটোনিক প্লেটের হারিয়ে যাওয়া অবশিষ্টাংশ সমুদ্রের নিচে এবং মহাদেশগুলোর অভ্যন্তরে লুকিয়ে রয়েছে।
তবে গবেষকদের মতে, আগে চিহ্নিত করা সাব-ডাক্টেড স্ল্যাবগুলো টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষস্থলে বা সংঘষের্র ইতিহাস আছে এমন এলাকায় পাওয়া গেছে। কিন্তু নতুন কিছু অস্বাভাবিক অংশ এমন জায়গায় পাওয়া গেছে যেখানে টেকটোনিক কার্যকলাপের কোনো প্রমাণ মেলেনি, যেমন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে। ফলে তা কিভাবে সেখানে পৌঁছেছে তা এখনো পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছেন তারা।
এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটি বিভিন্ন ধরনের ভূমিকম্প তরঙ্গ ব্যবহার করে পৃথিবীর অভ্যন্তরের উচ্চ-রেজোলিউশন মডেলিংয়ের মাধ্যমে করা হয়েছে।
লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুসারে, সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখ জিওলজিক্যাল ইনস্টিটিউটের ডক্টরেট প্রার্থী থমাস শাউটেন বলেন, ‘কিন্তু আমরা সঠিক জানি না এগুলো কী।’
গবেষকদের কাছে নতুন মানচিত্রায়িত অংশ বা ব্লবগুলো নিয়ে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তারা বিশ্বাস করে যে ডুবে থাকা প্লেটগুলো ৪০০ কোটি বছর আগে ম্যান্টেল তৈরির সময় অবশিষ্ট ভূত্বকের মতো উপাদান দিয়ে তৈরি হতে পারে। অথবা সেগুলো ম্যান্টেলের ভেতর গত কয়েক শ’ কোটি বছরে গঠিত অন্য কোনো ঘন পদার্থের অংশও হতে পারে।
তবে, গবেষকরা বলেছেন যে এগুলো কেবলই বিকল্প তত্ত্ব।
ইটিএইচ জুরিখের প্রতিনিধিরা বলেন, এই মুহূর্তে ব্লবগুলোর পরিচয়ে একটি ’বড় রহস্য’ রয়ে গেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, পৃথিবীর অভ্যন্তর সম্পর্কে আমরা যা কিছু জানি তা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ভূমিকম্প থেকে তৈরি সিসমোগ্রাফকে একত্রিত করার মাধ্যমে এসেছে। কিন্তু গবেষকরা নতুন গবেষণায় পূর্ণ-তরঙ্গরূপের বিপরীতকরণ ব্যবহার করেছেন, যা কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করে এই সিসমোগ্রাফগুলোকে একটি একক স্পষ্ট ছবিতে একত্রিত করে।
এই পদ্ধতির জন্য উল্লেখযোগ্যহারে গণনার প্রয়োজন হয়। ফলে এর জন্য লুগানোর সুইস ন্যাশনাল সুপারকম্পিউটার সেন্টারে পিজ ডেইন্ট সুপারকম্পিউটার ব্যবহার করা শুরু হয়। ফলাফলগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, ডুবে যাওয়া টেকটোনিক প্লেটের মতো অঞ্চলগুলো বিশাল মহাসাগরের নিচে এবং মহাদেশীয় ভূখণ্ডের গভীরে এমন এলাকায় রয়েছে, যা ডুবে থাকা টেকটোনিক প্লেটের মতো মনে হয়। অথচ এসব স্থানে অতীতে সাবডাকশনের কোনো ভূতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গবেষকরা মনে করেন যে, ভূমিকম্পের তরঙ্গ একই গতিতে উভয়ের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করে বলে নতুন আবিষ্কৃত ব্লবগুলো সাব-ডাক্টেড স্ল্যাব হতে পারে। তবে যে তারা যে একই জিনিস তার নিশ্চয়তা এটি দেয় না। দলটি বলেছে, তারা আসলে একই রকম কি না তা মূল্যায়ন করার জন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন।
শাউটেন বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন ধরনের তরঙ্গের পর্যবেক্ষণ গতি তৈরি করতে পারে এমন উপাদানের প্যারামিটার গণনা করতে হবে। মূলত, আমাদের তরঙ্গের গতির পেছনে থাকা বস্তুগত বৈশিষ্ট্যগুলোর দিকে আরো মনোযোগ দিতে হবে।’
সূত্র : এনডিটিভি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা