২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইমরান খানের ৬০ সমর্থককে সামরিক আদালতের শাস্তি প্রদান

- ছবি : ভয়েস অব আমেরিকা

পাকিস্তানের একটি সামরিক আদালত বৃহস্পতিবার কারারুদ্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ৬০ জন সমর্থককে সেনা স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ চালানোর অভিযোগে দুই থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা জানিয়েছে, দোষী সাব্যস্তদের মধ্যে ৭২ বছর বয়সী এই নেতার এক ভাগ্নে এবং দু’জন সাবেক সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন।

ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকেই কারাগারে বন্দি রয়েছেন। দুর্নীতি, উস্কানি প্রদান ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লোকজনকে ক্ষেপিয়ে তোলাসহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি।

সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা এবং রাষ্ট্রের অলঙ্ঘনীয় আইন যাতে রক্ষা করা যায় সেটি নিশ্চিত করতে দেশ, সরকার ও সেনাবাহিনী তাদের অঙ্গীকারে অবিচলিত রয়েছে।

এই শাস্তি প্রদানের এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে একই অভিযোগে সামরিক আদালত ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফের (পিটিআই) ২৫ জন সদস্যকে শাস্তি দেয়। তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগের পটভূমি হচ্ছে ২০২৩ সালের মে মাসে তাদের দেশব্যাপী প্রতিবাদ। সেই সময়ে বিক্ষোভকারীরা নজিরবিহীনভাবে পাকিস্তানের শক্তিধর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জনরোষ প্রদর্শন করে। এ সময় তারা অনেকগুলো সামরিক স্থাপনায় জোর করে প্রবেশ করে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।

তবে পিটিআই ‘গোপনীয়ভাবে’ এই সামরিক বিচারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইমরান খান ও তার সহযোগীরা কোনো রকম অন্যায় করার কথা অস্বীকার করে বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা পিটিআইয়ের সাথে কাজ করেছে।

বিক্ষোভকারীরা ‘শান্তিবাদীদের’ ভেতরে গোপনে প্রবেশ করে বিরোধী দলের উপর রাষ্ট্রীয় অভিযান চালানোর জন্য ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ সরকার অস্বীকার করেছে।

গত সপ্তাহে ২৫ জন পিটিআই সদস্যকে ১০ বছরের জন্য যে ‘সশ্রম কারাদন্ড’ দেয়া হয় সে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলেছে, তাদের দেশের সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যেন ন্যায়বিচারের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পাকিস্তানি বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক আদালতে শাস্তি প্রদান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই সামরিক আদালতগুলোর বিচারিক স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও যথাযথ প্রক্রিয়ার নিশ্চয়তা নেই।’

বেসামরিক লোকজনের সামরিক আদালতে বিচার করার সমালোচনা করে ব্রিটেন বলেছে, ‘তাদের স্বচ্ছতা এবং স্বাধীনভাবে যাচাই করতে না পারা ন্যায়বিচারের অধিকারকে খর্ব করে।’

পাকিস্তানি বেসামরিক লোকজনের সামরিক আদালতে বিচারের সমালোচনা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটিকে ‘অসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রতি পাকিস্তানের দায়বদ্ধতার সাথে অসামঞ্জস্যমূলক’ বলে অভিহিত করে।

তবে পাকিস্তান সরকার সামরিক বিচার ও বিচারে সাব্যস্ত হওয়া অপরাধীর বিষয়টিকে সমর্থন করেছে। তারা বলেছে যে এর মাধ্যমে ন্যায়বিচারের অধিকারকে সমুন্নত রাখা হয়েছে এবং সামরিক ট্রাইবুনাল ও বেসামরিক আদালতগুলোর কাছে আপিল করারও সুযোগ রয়েছে।

সূত্র : ভিওএ


আরো সংবাদ



premium cement