০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

চীন-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন

চীন-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন - সংগৃহীত

চীন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতারা রোববার তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বার্তা বিনিময় করেন। তাদের বার্তা শক্তিশালী সম্পর্কের আশা প্রকাশ করে, যখন বিদেশীরা তাদের সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

বার্তা বিনিময়টি এমন সময় হয়েছে যখন উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া তাদের সহযোগিতাকে তীব্রভাবে প্রসারিত করছে। চীন দৃশ্যত এ সহযোগিতা থেকে তাদের দূরত্ব বজায় রাখছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী কয়েক মাসে উত্তর কোরিয়া এবং চীনের মধ্যকার আদান-প্রদান এবং স্মারক অনুষ্ঠানের মাত্রাই তাদের মধ্যের সম্পর্কের সঠিক চিত্র তুলে ধরবে।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি গণমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ অ্যাজেন্সি (কেসিএনএ) জানায়, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে পাঠানো এক বার্তায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেন, তার সরকার দু’টি দেশের মধ্যে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে সুসংহত ও বিকাশের জন্য অবিচলভাবে চেষ্টা করবে।’

কেসিএনএ জানায়, কিমের কাছে তার বার্তায় শি বলেন যে চীন যৌথভাবে দু’দেশের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যের স্থিতিশীল এবং আরো অগ্রগতি প্রচার করতে প্রস্তুত।

উত্তর কোরিয়া এবং চীন ১৯৪৯ সালের ৬ অক্টোবর কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তখন থেকে তাদের মধ্যকার সম্পর্ককে প্রায়ই ‘ঠোঁট এবং দাঁতের মতো ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

চীন উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার এবং প্রধান সহায়তা প্রদানকারী দেশ। সন্দেহ করা হয়, উত্তর কোরিয়ার ওপর জাতিসঙ্ঘের নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন এড়াতে এবং তার দরিদ্র প্রতিবেশীকে টিকে থাকতে এবং কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের বিরুদ্ধে একটি প্রাচীর হিসেবে ব্যবহার করার জন্য গোপনে সাহায্য পাঠায় চীন।

কিন্তু অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সাথে একটি ত্রিমুখী, পাশ্চাত্যবিরোধী জোট গঠনে অনিচ্ছুক চীন। কারণ তারা অসংখ্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে এবং ইউরোপ এবং তার এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে একটি স্থিতিশীল আঞ্চলিক নিরাপত্তামূলক পরিবেশ বেশি পছন্দ করে।

উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যেকার সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এমন প্রবল সন্দেহের মধ্যে যে উত্তর কোরিয়া সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তার বিনিময়ে ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে প্রচলিত অস্ত্র সরবরাহ করেছে।

জুন মাসে পিয়ংইয়ংয়ে একটি বৈঠকের সময় কিম ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ চুক্তি অনুযায়ী দু’টি দেশের কোনো একটি আক্রমণের শিকার হলে তারা পারস্পরিক সামরিক সহায়তা করবে। এ চুক্তিকে স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পর দু’টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়া তাদের অগ্রসরমাণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাদের অংশীদারদের সাথে বিবাদে জড়িত।

কিম বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলা করতে পারমাণবিক এবং প্রচলিত উভয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছেন।

রোববার কেসিএনএ জানায়, কিম একটি সামরিক অ্যাকাডেমির ক্যাডেটদের একটি লাইভ আর্টিলারি ফায়ারিং মহড়া তদারকি করেন। মহড়াটি দেখার পর কিম বলেন, সামরিক অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমগুলোকে অবশ্যই স্বল্প সময়ে এবং আকস্মিক অপারেশনের মাধ্যমে শত্রুদের নিশ্চিহ্ন করতে গেরিলা যুদ্ধের কৌশলের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement