কলকাতা বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীর একটি বই বিক্রি নিষেধ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:০০, আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:১৯
ঢাকার একুশে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল না দেয়ার পরে এবার তাদের প্রকাশিত ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’ বইটি কলকাতা বই মেলাতেও বিক্রি না করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। আদর্শ প্রকাশনীর প্রকাশক মাহবুবুর রহমানকে লেখা এই চিঠিটি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরে মঙ্গলবার থেকে ৪৬তম কলকাতা বই মেলা শুরু হয়েছে।
প্রকাশনী সংস্থাটির কর্মকর্তা, কলকাতা বইমেলায় আদর্শের স্টলের দায়িত্বে থাকা খায়রুল ইসলাম পলাশ জানান, বইটি বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু বইটি বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে।
কলকাতা গিল্ডের বক্তব্য
সামাজিক মাধ্যমে কয়েকটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, কলকাতা বইমেলার আয়োজক সংস্থা বুকসেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ড এই বই না নিয়ে আসার অনুরোধ করে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতিকে চিঠি দিয়েছিল।
তবে গিল্ডের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা এই অভিযোগ নাকচ করে দেন।
বুকসেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চ্যাটার্জি বলেন, ‘আমরা এরকম কোনো চিঠি পাঠাইনি, এরকম চিঠি পাঠানোর কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’
আদর্শের ‘ভালোর জন্য’
প্রশ্ন উঠেছে যে বিদেশের মাটিতে কোন প্রকাশক কোন বই বিক্রি করবে, তা কি বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি ঠিক করে দিতে পারে?
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নেতা শ্যামল পাল জানিয়েছেন, এটা তারা আদর্শের ভালোর জন্যই করেছেন।
শ্যামল পাল বলেন, ‘তারা কলকাতা বইমেলায় গেছে, ওই সময়ে তারা যাতে কোনো সমস্যায় না পড়ে, তাদের ভালোর জন্য ওই বইটা প্রদর্শন ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে বলেছি আমরা। বইটা নিয়ে যেহেতু বিতর্ক রয়েছে, যার মধ্যে সরকার, প্রশাসনও জড়িয়ে গেছে, তাই সমিতি চাচ্ছে না যে কলকাতা বইমেলায় আদর্শ স্টলে বইটা রাখা নিয়ে কোনো বিতর্ক হোক।’
কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের ব্যবস্থাপনা দেখেছে বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস।
শ্যামল পাল মনে করেন, তারা যদি এই বইটা আদর্শের স্টলে দেখে স্টলটা বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিদেশের মাটিতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তবে আমরা বলছি না যে প্রশ্ন আসবেই, কিন্তু যদি প্রশ্ন ওঠে, ওই শঙ্কা বিবেচনা করেই বলছি যে ওই বইটা না নিয়ে কলকাতায় মেলাটা করেন।’
তবে শ্যামল পালের কথা প্রসঙ্গে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-রাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস জানিয়েছেন, ওই বিতর্কিত বইটি কলকাতা বই মেলায় বিক্রি বা প্রদর্শন করা হলে যে স্টলটি বন্ধ করে দিতে হবে, এমন কোনো নির্দেশ তার কাছে নেই।
তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু একই সাথে এটাও বলবো, যে বইটা নিয়ে বিতর্ক আছে, সে বই প্রদর্শন বা বিক্রি না করা হলেই ভালো।’
একুশে বই মেলা
ঢাকার একুশে বইমেলার আয়োজক বাংলা অ্যাকাডেমি যদিও আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল না দেয়ার কারণ হিসেবে তাদের প্রকাশিত তিনটি বইয়ের কথা মৌখিকভাবে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিল।
বই তিনটা হলো ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা, বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে এবং উন্নয়ন বিভ্রম’।
তবে কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি শুধুমাত্র ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’ বইটিই বিক্রি করতে নিষেধ করেছে।
সমিতির চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে-লেখক ফাহাম আব্দুস সালামের বইটি ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলা-২০২৩-এ প্রদর্শন ও বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হলো।’
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা