আজ তোমরা জানবে আতশবাজি সম্পর্কে । আতশবাজি এক ধরনের আলোর কারুকাজ। রাসায়নিক দাহ্য বস্তু দিয়ে এই বাজি তৈরি করা হয়, যা বিভিন্ন উৎস থেকে ঊর্ধ্ব আকাশে
প্রক্ষেপণ করা হয়। লিখেছেন মৃত্যুঞ্জয় রায়
আমাদের গ্রহের অনেক দেশেই আতশবাজি পুড়িয়ে আনন্দ করার ঐতিহ্য রয়েছে। এখন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খেলাধুলা ও অনুষ্ঠানে আতশবাজি পোড়ানোর রেওয়াজ যুক্ত হয়েছে। আমাদের দেশেও বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিশেষ করে পূজা-পার্বণ ও বিয়েতে আতশবাজি পুড়িয়ে আনন্দ করার এক অতীত ঐতিহ্য রয়েছে। তবে এখন সরকারি নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করায় সে ঐতিহ্যে ভাটা পড়েছে। এ দেশে বাজি, পটকা, আতশবাজি ইত্যাদি প্রচলিত।
আতশবাজি এক ধরনের আলোর কারুকাজ। এ জন্য একে ইংরেজিতে বলা হয় ঋরৎবড়িৎশং. রাসায়নিক দাহ্যবস্তু দিয়ে এই বাজি তৈরি করা হয়, যা বিভিন্ন উৎস থেকে ঊর্ধ্ব আকাশে প্রক্ষেপণ করা হয়। প্রাচীনকালে বিভিন্ন জাতি ও ধর্মীয় গোষ্ঠী আতশবাজি ফুটিয়ে বিজয়োৎসব পালন করত। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও আতশবাজি পোড়ানো হতো। ইতিহাস থেকে জানা যায়, নবম শতকে চীনারা আতশবাজি তৈরির জন্য বারুদ ব্যবহার করত এবং তারাই আতশবাজির প্রভূত উন্নতি সাধন করে। পঞ্চদশ শতক থেকে আতশবাজি জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করে। বিভিন্ন দাহ্য ও বিস্ফোরক রাসায়নিক দ্রব্যের সংমিশ্রণে আতশবাজির শব্দ, ঔজ্জ্বল্য ও রঙের বৈচিত্র্য সৃষ্টি করা হয়। গতিবেগ ও শব্দ সৃষ্টির প্রধান রাসায়নিক উপাদান হলো পটাশিয়াম নাইট্রেট ও সালফার। এর সাথে থাকে লোহার গুঁড়ো ও কাঠকয়লার গুঁড়ো। বারুদের গুঁড়োও মেশানো হয়। কখনো কখনো আলোর উজ্জ্বলতার জন্য এতে নাইট্রেট অব লেড, বেরিয়াম ও অ্যালুমিনিয়াম চূর্ণ ইত্যাদি মেশানো হয়। আতশবাজির এসব রাসায়নিক উপাদান ও পরিমাণের কারণে এক এক বাজি এক রকমের আলোর কারুকাজ তৈরি করে। এ জন্য এক এক আতশবাজি এক এক নামে পরিচিত। যেমন তারার মতো আলো দেয় যে তাকে বলে তারাবাজি। এ ছাড়া আছে ফুলঝুরি, তুবড়ি, চরকিবাজি, কদমঝাড় ইত্যাদি নামের আতশবাজি। তবে তারার মতো আলো সৃষ্টিকারী আতশবাজিই বেশি দেখা যায়। এ দেশে বিভিন্ন জাতীয় দিবসেও আতশবাজি পোড়ানোর ঐতিহ্য রয়েছে।
ছবি : ইন্টারনেট