জি-২০ সম্মেলনে গাজা ও ইউক্রেন নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের ‘পঙ্গুত্বের’ নিন্দা ব্রাজিলের
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:০২
উত্তেজনাপূর্ণ জি-২০ সম্মেলনে গাজা এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের ‘পঙ্গুত্বের’ সমালোচনা করেছে ব্রাজিল।
বুধবার জি-২০ সম্মেলন শুরু হয়েছে। বৈঠকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর বিভাজন দেখা দিয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রিও ডি জেনিরোতে জি-২০ এর বছরের প্রথম উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের জন্য জড়ো হয়েছেন। তবে বিশ্বকে আঁকড়ে ধরা দ্বন্দ্ব এবং সংকটের কাঁটাযুক্ত এজেন্ডার অগ্রগতির সম্ভাবনা ক্ষীণ।
ব্রাজিলের শীর্ষ কূটনীতিক মাউরো ভিয়েরা এই দুই দিনের বৈঠকের সূচনা করে বলেন, বিশ্বব্যাপী সংঘাতের ভয়াবহ বিস্তার ঠেকাতে জাতিসঙ্ঘের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না।
‘বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য সঠিকভাবে উপযুক্ত নয়, যেমন গাজা এবং ইউক্রেনে চলমান সংঘাতের বিষয় নিরাপত্তা পরিষদের অগ্রহণযোগ্য ‘পঙ্গুত্ব’ প্রদর্শিত হয়েছে।
ভিয়েরা বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে ‘নিরীহ মানুষের জীবন’ ক্ষয় হচ্ছে। ইইউ পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল তার অংশের জন্য বহুপক্ষীয়তাকে ‘সঙ্কট’ বলে সতর্ক করেছেন।
নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার ভেটো প্রদানের কারণে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিষয়ে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে এবং ইসরাইলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান অবরুদ্ধ করেছে।
গত ডিসেম্বরে ভারতের কাছ থেকে আবর্তিত জি-২০ সভাপতিত্ব গ্রহণকারী ব্রাজিল আশা প্রকাশ করেছে, এই ধরনের সংকটের প্রশ্নে অগ্রগতির জন্য গ্রুপটির একটি ফোরাম হতে পারে।
তবে লুলা রোববার ইসরাইলকে ‘গণহত্যার’ জন্য অভিযুক্ত করায় কূটনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সামরিক অভিযানকে হলোকাস্টের সাথে তুলনা করেন লুলা।
এই মন্তব্যে ইসরাইল ক্ষুব্ধ হয়। প্রেসিডেন্ট লুলাকে ব্যক্তিত্বহীন ব্যক্তি হিসবে ঘোষণা করে তারা। এতে জি-২০ এর মাধ্যমে দ্বন্দ্ব নিরসনের প্রচেষ্টা ম্লান করে দিতে পারে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তনি ব্লিঙ্কেন জি-২০ সম্মেলনে যাওয়ার আগে বুধবার ব্রাসিলিয়ায় লুলার সাথে দেখা করেছিলেন। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ‘আমরা লুলার মন্তব্যের সাথে একমত নই।’
কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট লুলার প্রাসাদে ৯০ মিনিটেরও বেশি সময়ব্যাপী বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন এবং প্রেসিডেন্ট লুলার মধ্যে ‘খোলাখুলি’ আলোচনা হয়েছে।
হামাসকে নির্মূলে ইসরাইলের অঙ্গীকারের কারণে গাজায় শান্তির পথে অগ্রগতির সম্ভাবনা ক্ষীণ।
একইভাবে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের জন্য মারাত্মক, যেখানে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আক্রমণের দ্বিতীয় বার্ষিকী হিসেবে জি-২০ সদস্যরা বিভক্ত।
আক্রমণের নিন্দা করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে চাপ দেয়া সত্ত্বেও ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০-এর শেষ শীর্ষ সম্মেলনটিতে শক্তি প্রয়োগের নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়ে শেষ হয়েছিল। এতে স্পষ্টভাবে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করেনি, ভারত ও ব্রাজিলের সাথে রাশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকায় কোনো কড়া পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়নি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, তিনি ল্যাভরভকে সরাসরি ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের কথা’ বলার জন্য রিও বৈঠকটি পরিকল্পনা করেছিলেন। কারণ ব্রিটেন গত সপ্তাহে রাশিয়ার কারাগারে বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির মৃত্যুর জন্য ছয় রুশ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ বৃহস্পতিবার ব্রাসিলিয়ায় লুলার সাথে দেখা করবেন, ব্রাজিলের একজন কর্মকর্তার মতে ল্যাভরভ এরই মধ্যে ‘ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ বৃদ্ধির’ জন্য পশ্চিমের সমালোচনা করেছেন।
ব্রাজিলের সংবাদপত্র ও গ্লোবোকে ল্যাভরভ বলেন, ‘কিয়েভ বা পশ্চিমা কেউই সংঘাত সমাধানে রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখায়নি।’
ব্লিঙ্কেন লুলার সাথে তার বৈঠকে ইউক্রেনের ওপর কূটনীতির বর্তমান সম্ভাবনার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা এখনই এর জন্য শর্ত দেখতে পাচ্ছি না।’
সূত্র : বাসস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা