বিধ্বংসী দাবানলে বিপর্যস্ত ক্যালিফোর্নিয়া, ২৯ লাখ একর জমি পুড়ে ছাই
- রয়টার্স ও বিবিসি
- ০৯ জুলাই ২০১৮, ১০:১৬
দাউ দাউ করে জ্বলছে বিস্তীর্ণ জঙ্গল। দাবানলের দ্রুত গতি বাড়াচ্ছে তাপমাত্রা। দ্য হলি ডে দাবানল, উত্তর ক্যালিফোর্নিয়াবাসীর ঘুম উড়িয়েছে। বৃহৎ দাবানলে বিপর্যস্ত হয়ে নিরাপদ স্থানের খোঁজে ঘর ছেড়েছে অগণিত মানুষ। ইতিমধ্যে পুড়ে ছাই হয়েছে অনেক বাড়ি। দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে আগুন।
চলতি বছরের সবচেয়ে বড় দাবানলের মুখে পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়া। দক্ষিণ আমেরিকার গোলটা, ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। দাবানলের পাশাপাশি প্রচণ্ড গতির বাতাসে দ্রুত ছড়াচ্ছে আগুন। সেন্ট বারবারা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শনিবার থেকে সেখানে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রচণ্ড দাবানলে আতঙ্কিত ক্যালিফোর্নিয়াবাসী।
উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার পুরো এলাকা ধূলো ও ছাইয়ে ঢেকে গেছে। কমপক্ষে ২ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ এলাকায় নেই বিদ্যুৎ। জরুরি অবস্থা জারি করে ৩৫০টি হেলিকপ্টারে করে চলছে আগুণ নেভানোর কাজ। ওপরের দিকে আগুণ বেশি বিস্তৃত হওয়ায় আগুণ নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল বাহিনী।
উদ্ধারকর্মীরা জানায়, রবিবার আগুনের পরিমাণ কম হলেও প্রচণ্ড বাতাস বইছে। সাথে গরম পড়েছে তীব্র। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি আগুন দ্রুত নেভাতে।
চলতি বছরে ক্যালিফোর্নিয়ায় ২.৯ মিলিয়ন একর জমি দাবানলে পুড়ে ছাই হয়েছে। ভয়ানক এ দাবানলের নাম দেওয়া হয়েছে 'ক্লামাথন'। গত শুক্রবারে নতুন করে আবার থাবা বসায় ক্লামাথন। ক্লামাথনে পূরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ ক্যালিফোর্নিয়ার ওরেগন অঞ্চল। সেখানে ৮৮হাজার ৩শ ৭৫ একর জমি পুড়ে ছাই হয়েছে।
সেখানে সড়কপথে গাড়ি চলছে না, চলছে না আকাশপথে বিমানও। গত ১০ বছরে ভয়াবহ দাবানলে চরম ক্ষতির মুখে ক্যালিফোর্নিয়া। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানাচ্ছে, ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে।
‘দ্য হলিড ফায়ার’ নামের দাবানল থেকে প্রায় ৩০টি অগ্নিমুখ তৈরি হয়। এতে দাবানল ছড়িয়ে পরে গোলেটা, ক্যালিফোর্নিয়া, দক্ষিণ সান্তা বারবারা এবং উপকূলীয় পাহাড়ি অঞ্চলে। দাবাচলের সাথে উচ্চ গতির বাতাস থাকায় খুব দ্রুত তা লোকালয়ের খুব কাছে চলে আসে। তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় একশ ডিগ্রী এরও উপরে।
দাবানলের ঘটনায় ইতোমধ্যে বিদ্যুতহীন অবস্থায় আছে আরো প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। জরুরি অবস্থা জারি করে পরিস্থিতি মোকাবেলায় অর্থ বরাদ্ধ করেছে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন। সান্তা বারবারার স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, দাবানল মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত ৩৫০ জন দমকলকর্মী কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে পুড়ে গেছে প্রায় ৮০ একর বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
সান্তা কাউন্টির ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র মাইক এলিয়াসন বলেন, এটা ছোট একটা আগুন ছিল কিন্তু বাতাসের কারণে তা বড় রূপ ধারণ করে। আমরা দ্রুত এটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে জোর অভিযান পরিচালনা করব। তবে তাপমাত্রা বাড়লে বাতাসের গতি আবারো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলে জানান মাইক।
যুক্তরাষ্ট্রে বনাঞ্চলে আগুন থেকে দাবানল ছড়িয়ে পরা অনেকটাই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। দেশটির ন্যাশনাল ইন্টারজেন্সি ফায়ার সেন্টারের এক তথ্যমতে, বিগত ১০ বছরে গড়ে প্রতি বছর প্রায় দুই দশমিক চার মিলিয়ন একর এলাকা দাবানলে পুড়ে যায়। তবে চলতি বছরে দাবানলে এখন পর্যন্ত এই গড় পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে। এ বছর এখন পর্যন্ত প্রায় দুই দশমিক নয় মিলিয়ন একর পরিমাণ এলাকা দাবানলে পুড়ে যায়।
ধুলো ও ছাইয়ে ঢেকেছে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া। অন্তত ২হাজার মানুষ গৃহহীন। বিদ্যুৎহীন অধিকাংশ এলাকা। হাই অ্যালার্ট জারি করে চলছে আগুন নেভানোর কাজ। আগুন উপরের দিকে এতটাই বিস্তৃত যে, আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল বাহিনী।
চলতি বছরে ক্যালিফোর্নিয়ার ২৯ লাখ একর জমি দাবানলে পুড়ে ছাই। ভয়ানক এই দাবানলের নাম ক্লামাথন। গত শুক্রবার নতুন করে এই ক্লামাথন দাবানল থাবা বসিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ওরেগন অঞ্চল দাবানলে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত। শুধু ওরেগনেই ৮৮,৩৭৫ একর জমি পুড়ে ছাই।
সবমিলিয়ে দাবানল বিধ্বস্ত ক্যালিফোর্নিয়ায় ৩৬০০ দমকল ইঞ্জিন। এখনও চলছে আগুন নেভানোর কাজ। বিমান ওঠা নামা পুরোপুরি ব্যাহত। সড়ক পথেও গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ। সবমিলিয়ে, গত ১০ বছরে প্রথম ভয়াবহ দাবানলের চরম ক্ষতির মুখে ক্যালিফোর্নিয়া।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা