রাজধানীতে মানুষের যাতায়াত কমছে
- ২৪ মার্চ ২০২০, ০০:০০
করোনার আতঙ্কে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। পরামর্শ দেয়া হয়েছে যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকার। যদিও সব মানুষ জীবিকার তাড়নায় হলেও বাড়িতে বসে থাকতে পারছে না। তবে রাজধানীতে তুলনামূলক মানুষের যাতায়াত অনেক কমেছে। পরিবহন খাতের মালিক-শ্রমিকরা জানিয়েছেন, গত ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পর থেকে মানুষের গ্রামমুখী যাতায়াত বেড়েছে। অনেকেই পরিবার পরিজন ঢাকার বাইরে রেখে আসছেন।
স্বাভাবিক সময়ে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে গড়ে ১৬ হাজারের মতো যানবাহন চলাচল করে। অথচ ১৩ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত আট দিনে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৮ হাজার ৪৬৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার সর্বোচ্চ যাতায়াত হয়েছে ২০ হাজার ১৯৫টি।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) প্রথমবার বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুর খবর জানানোর পর থেকেই গ্রামের পথে মানুষের যাতায়াত বেড়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে যুক্ত কর্মকর্তারা বলছেন, তিন-চার দিন ধরে ২০ হাজারের কাছাকাছি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে সারা বিশ্বেই মানুষের যাতায়াতের ওপর বিধিনিষিধ আরোপ করছে। গণপরিবহন, গণজমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শও এসেছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বাসে হ্যান্ড সেনিটাইজার রাখা, চালক-শ্রমিকদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনে জ্বর মাপার যন্ত্র রাখার নির্দেশনা দিয়েই দায় সেরেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান সাইফ উল্লাহ মুন্সী জানিয়েছেন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আছে। কিন্তু কী করা উচিত আর কী পরিহার করা দরকার, তা মনে স্পষ্ট নয়। অন্যথায় তারা কেন এত যাতায়াত করছে? মানুষ আতঙ্ক ও ঝুঁঁকি আলাদা করতে পারছে না। বাংলাদেশের গণপরিবহনে সংক্রমণ ঠেকানোর কোনো ব্যবস্থাই নেই। এ পরিস্থিতিতে বেশি বেশি যাতায়াত মানেই ঝুঁঁকি বাড়ে। বিশেষ করে বয়স্কদের একেবারেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া উচিত নয়।
গণপরিবহন ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার আহ্বান
গণপরিবহন ব্যবহারে যাত্রীরা সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করলে করোনাভাইরাসের ভয়াবহভাবে বিস্তার ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী। গত বুধবার এক বিবৃতিতে এ মুহূর্তে গণপরিবহন ব্যবহারসংক্রান্ত বিশেষ সতর্কতা প্রচারের পাশাপাশি গণপরিবহনকে জীবাণুমুক্ত রাখতে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সাথে বাস টার্মিনাল ও বাসস্টপেজ, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের পাশাপাশি আকাশপথের যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানার বসিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।