২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ক্ষত ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে চান বাসিন্দারা

-

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে চারতলা ওয়াহেদ ম্যানশন এক বছর পরও রাতের ট্র্যাজেডির নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনটির ওপরের দিকে তাকালে আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া ইটের স্তর এখনো চোখে পড়ে। এর ঠিক বিপরীত পাশের চারতলা ভবনটিও সেই রাতের আগুনের ক্ষত বহন করে চলেছে। তবে পুড়ে যাওয়া অন্য ভবনগুলো এরই মধ্যে সংস্কার করা হয়েছে। পোড়া যন্ত্রণা আর স্বজন হারানোর ক্ষত ভুলে এলাকার বাসিন্দারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় রয়েছেন। গত কয়েক দিন ওই এলাকা ঘুরে, হতাহতের পরিবার এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
গত বছরের ২০ ফেব্র“য়ারি রাতে লাগা আগুনে চুড়িহাট্টার সরু গলিটা তখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল। রাস্তাজুড়ে পড়ে ছিল পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া মানুষের দেহের অংশবিশেষ, আটকে থাকা পোড়া গাড়ির কঙ্কাল। পোড়া ধ্বংসস্তূপ ঘেঁটে অঙ্গার হওয়া ৬৭ জনের লাশ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা। চারজন মারা যান চিকিৎসাধীন অবস্থায়। তবে এক বছর পরও তিনটি লাশের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। যাদের অবহেলা আর লোভে আগুনের এত ভয়াবহতা, সেই ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখিও করা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে আজ নানা কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দারা শোকের দিনটি পালন করছেন।
চুড়িহাট্টা ঘুরে দেখা গেছে, যে ভবন থেকে আগুন ছড়িয়েছিল, সেই ওয়াহেদ ম্যানশনের পশ্চিম পাশের একটি ভবনের নিচে ছিল সেলিম আহমেদ লিটনের মুদি দোকান। ঘটনার সময় তিনি দোকানেই ছিলেন। তবে দৌড়ে প্রাণে বাঁচলেও আহত হয়েছিলেন। ঘটনার তিন মাসের মধ্যে ঋণ করে নিজের দোকানটি আবার চালু করেছেন। লিটন জানান, সেই রাতের কথা মনে পড়লে তিনি এখনো শিউরে ওঠেন। তিনি দৌড়াচ্ছিলেন, আগুনও যেন তার পেছনে দৌড়াচ্ছিল। এর মাঝেই বেঁচে গেছেন। তার কথাÑ জীবনকে তো আর থামিয়ে রাখা যায় না। সংসার চালাতে ফের একই জায়গায় দোকান চালু করেছেন।
লিটনের দোকানের পাশেই একটি দন্ত চিকিৎসালয় থেকে দগ্ধ কয়েকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। এরপর আর সেখানে দন্ত চিকিৎসালয় চালু না হলেও ওই জায়গায় এখন চায়নিজ ও ইন্ডিয়ান খাবারের রেস্তোরাঁ চালু করেছেন অন্য মালিক। ওই রেস্তোরাঁর কর্মীরা বলছিলেন, তিন মাস আগে রেস্তোরাঁ চালুর পর জেনেছেন, এখানে আগুন লেগেছিল। তবে এই দোকানটার ভেতরেই যে মানুষ পুড়ে মরেছে, তা জানতেন না।
চুড়িহাট্টার আগুনে নিহতের মধ্যে ৬৭ জনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই তা ওই ঘটনায় দায়ের মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবে।


আরো সংবাদ



premium cement