উদ্বাস্তুদের জন্য সদরঘাটে আশ্রয়কেন্দ্র
- ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য রাজধানীর সদরঘাটে ৮৪ হাজার বর্গফুট এলাকায় ছয়তলাবিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এই আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ থেকে এক হাজার মানুষ বিভিন্ন ধরনের সেবা ও সহযোগিতা নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্রটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। অচিরেই আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, এই সেবাকেন্দ্রটি থেকে নারী ও শিশুসহ সবার জন্য জরুরি চিকিৎসাসেবা, অসহায় মানুষের জন্য বৃদ্ধাশ্রম, পথবাসী নারীদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও শিক্ষাকেন্দ্র, কম্পিউটার ল্যাব, মনোসামাজিক কাউন্সেলিং কেন্দ্র, শিশুদের জন্য প্রারম্ভিক বিকাশ কার্যক্রম (ইসিডি) ও দিবাযতœ কেন্দ্র, শারীরিক বা মানসিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিশেষ শিক্ষাকার্যক্রম ও সচেতনতামূলক শিক্ষা সেশন রয়েছে।
এ ছাড়া শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য, বিনোদনের ব্যবস্থা এবং পথবাসী নারীদের জন্য আবাসন সুবিধাসহ জীবিকা উন্নয়ন ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের সুবিধা রয়েছে। পাশাপাশি ভবনসংলগ্ন রয়েছে একটি উন্নতমানের প্রতিবন্ধীবান্ধব সেবাকেন্দ্র; একটি অত্যাধুনিক পাবলিক টয়লেট এবং মানবিক অধিকার নিশ্চিতকরণে রয়েছে একটি মাতৃদুগ্ধপান কেন্দ্র।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতিনিয়ত বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দারিদ্র্যের কারণে উদ্বাস্তু হয়ে অসংখ্য মানুষ শহরে পাড়ি জমাচ্ছে। শহরেও আছে অগণিত দরিদ্র আর উদ্বাস্তু মানুষ। মহাপ্রান্তিক এসব মানুষের মধ্যে প্রায় সাত লাখ লোক পথ বা ঝুপড়িবাসী, যারা খোলা আকাশের নিচে অত্যন্ত অমানবিক অবস্থায় জীবনযাপন করেন।
বিশেষত পথবাসী মানুষের বিপন্নতার কথা চিন্তা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় সাজেদা ফাউন্ডেশন, কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও ওয়াটার এইডের যৌথ প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে মানিকনগরে একটি পথবাসী সেবাকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। যার জন্য ভূমি দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এই কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জীবিকা উন্নয়ন, মানসিক স্বাস্থ্য প্রভৃতি নিয়ে সমন্বিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় সদরঘাটে প্রায় ৮৪ হাজার বর্গফুট এলাকায় ছয়তলাবিশিষ্ট একটি জলবায়ু উদ্বাস্তু সেন্টার নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে।
কী সেবা পাওয়া যাচ্ছে
ভবনটির নিচতলায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবাসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে ডায়াগনস্টিক, গাইনি, শিশু, মেডিসিন, চর্ম ও দন্ত সেবা প্রদান করা হয়। দোতলার বাম পাশে রয়েছে ৭৫ জন বয়স্কের জন্য দিবাযতœ কেন্দ্র এবং ডান পাশের কক্ষগুলোর মধ্যে একটি প্রশিক্ষণ, একটি কম্পিউটার ল্যাব, একটি মনোসামাজিক কাউন্সেলিং কেন্দ্র। এর একটি কক্ষে রয়েছে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়। ভবনের তিনতলার বাম পাশে রয়েছে দুই থেকে ছয় বছর বয়সী ৮৫ জন শিশুর জন্য প্রারম্ভিক বিকাশ কার্যক্রম (ইসিডি) ও দিবাযতœ কেন্দ্র। এ ছাড়াও ৭ থেকে ১০ বছরের শিশুদের শিক্ষাসহ সব শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাদ্য ও বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। ডান পাশে ৮৫ জন স্কুলপড়ুয়া শিশুর জন্য শিক্ষা, শারীরিক বা মানসিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিশেষ শিক্ষা কার্যক্রম ও সচেতনতামূলক শিক্ষা সেশন রয়েছে। আর চতুর্থতলায় ও পঞ্চমতলায় ৪৫২ জনের জন্য আবাসন সুবিধাসহ জীবিকা উন্নয়ন ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের সুবিধা রয়েছে। ভবনসংলগ্ন একটি উন্নতমানের প্রতিবন্ধীবান্ধব সেবাকেন্দ্র এবং পাবলিক টয়লেট এবং মানবিক অধিকার নিশ্চিতকরণে রয়েছে একটি মাতৃদুগ্ধপান কেন্দ্র।