২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পদ্মফুলের মতো হবে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল

-

দেশে প্রতি বছর ৮ শতাংশ হারে আকাশপথে যাত্রী বাড়ছে। তাই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনতলা বিশিষ্ট তৃতীয় টার্মিনাল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচন করেছেন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো: মফিদুর রহমান জানিয়েছেন, নতুন টার্মিনাল ভবন হবে অটোমেটেড। এটি এমন একটি পদ্ধতিতে নিয়ে আসা হচ্ছে, যেন কেন্দ্রীয়ভাবে প্রতিটি কাজ পর্যবেক্ষণ করা যায়।
তৃতীয় টার্মিনালে যাত্রীদের বহির্গমনের জন্য থাকবে মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার। এর মধ্যে ১৫টি হবে সেলফ সার্ভিস চেক-ইন কাউন্টার। ফলে কাউকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। বর্তমানে দুটি টার্মিনালে চেক-ইন কাউন্টার আছে ৬০টি।
নতুন টার্মিনাল ভবনে ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল (এপিসি) কাউন্টারসহ বহির্গমনরত যাত্রীদের জন্য ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে ৬৬টি। যারা শাহজালাল বিমানবন্দরে আগমন করবেন, তাদের ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি ইমিগ্রেশন কাউন্টার রাখা হবে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তৃতীয় টার্মিনালের ভবন হবে তিনতলা। ভবনটির আয়তন হবে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার এবং লম্বা ৭০০ মিটার ও চওড়া ২০০ মিটার। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দর বছরে ৮০ লাখ যাত্রী ধারণে সক্ষম। এটি নির্মিত হলে এই বিমানবন্দর দিয়ে বছরে মোট দুই কোটি যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। এ ভবনটির নকশা করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের (সিঙ্গাপুর) স্থপতি। রোহানি বাহারিন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ভবনের নকশা করেছেন।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। তৃতীয় টার্মিনালে ২৪টি বোডিং ব্রিজের ব্যবস্থা থাকলেও প্রকল্পের প্রথম ধাপে ১২টি বোডিং ব্রিজ চালু করা হবে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার থাকবে। এ ছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে। আগমনীর ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট এবং ১৯টি চেক-ইন অ্যারাইভাল কাউন্টার থাকবে। টার্মিনালে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট স্থাপন করা হবে।
তৃতীয় টার্মিনালে যাত্রীদের দ্রুত সেবা দিতে গ্রাউন্ড সেবায়ও আসবে পরিবর্তন। বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শাহজালাল বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিচ্ছে। তৃতীয় টার্মিনালে বিমান ছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠান গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবে। টার্মিনাল ভবনের সাথে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ পথ ও উড়াল সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে মেট্রোরেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ থাকবে। আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখা হবে এতে। তৃতীয় টার্মিনাল শাহজালালের নতুন টার্মিনালের সাথে নির্মাণ করা হবে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন। এতে এক হাজার ৪৪টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। ভবনের অভ্যন্তরে দক্ষিণ পাশে সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ভিভিআইপি জায়গা রাখা হবে। এ ছাড়া যাত্রীরা পাবেন লাউঞ্জ, বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী বিক্রির দোকান, রেস্তোরাঁসহ সংশ্লিষ্ট অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা।


আরো সংবাদ



premium cement