ডেঙ্গুর প্রকোপ কমলেও মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী
- ১২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমলেও কমেনি মশার উপদ্রব। নগরবাসী মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। লোকজন বলছেন, মশকনিধন কার্যক্রমে ঢিলেমির কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, এখন নগরে মূলত কিউলেক্স মশার উপদ্রব চলছে। স্ত্রী কিউলেক্স মশার মাধ্যমে অসুস্থ ব্যক্তির শরীর থেকে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ফাইলেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। ‘গোদ’ নামে পরিচিত এই রোগের কারণে হাত-পা ফুলে যায়। বারবার জ্বর হয়।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার জানিয়েছেন, ডেঙ্গুর সময় যেভাবে মশকনিধন কার্যক্রম চালানো হয়েছিল, এখন তা আর নেই। তাই কিউলেক্স মশা বেড়েছে। তবে নতুন করে দুর্যোগ এড়াতে হলে মশকনিধন কার্যক্রমে ঢিলেমি দেয়া যাবে না। কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এখনই জোর দিতে হবে। মশকনিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
চলতি বছরের জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল বেশি। এ সময়ে দুই সিটি করপোরেশন বড় আকারে মশকনিধন কর্মসূচি পরিচালনা করে। নগরের বাসিন্দারা বলছেন, সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এ কার্যক্রমে ঢিলেঢালা ভাব দেখা দিয়েছে। এই সুযোগে মশার উপদ্রব বেড়েছে। তবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বলছে, কিউলেক্স মশার উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গত কয়েক দিনে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, আদাবর, লালবাগ, সূত্রাপুরসহ অন্তত আটটি এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে মশার প্রকোপ ব্যাপক বেড়েছে। মিরপুর ১০ নম্বরের বাসিন্দা রবিউল আলম বলেন, সন্ধ্যার পর কয়েল জ্বালিয়েও মশা থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। তার অভিযোগ, গত ১৫ দিনে তার বাসার সামনে মশার ওষুধ ছিটাতে তিনি দেখেননি। একই অভিযোগ মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা রুবেল মিয়ার। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পর জোরেশোরে মশকনিধন কার্যক্রম চলেছে। তবে এখন এর অর্ধেক পরিমাণ কাজও হচ্ছে না।
কিউলেক্স মশার উপদ্রব সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ জানিয়েছেন, কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানের অংশ হিসেবে প্রতিদিন পাঁচটি করে ওয়ার্ডে জরিপ করা হচ্ছে। জরিপকারী কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, কোনো কোনো এলাকায় কিউলেক্স মশার প্রকোপ বেশি তা কীটতত্ত্ববিদের মাধ্যমে জরিপ করে চিহ্নিত করেছেন। যেসব এলাকায় কিউলেক্স মশা তুলনামূলক বেশি, সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সাধারণত শীতকালে কিউলেক্স মশার প্রকোপ বাড়ে। তাই পুরোপুরি শীত পড়ার আগেই যেকোনো মূল্যে কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন।