অবশেষে গ্রেফতার ঢাকার সম্রাট
- ০৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
টানা ১৯ দিন নানামুখী আলোচনার পরে গত রোববার ভোরে দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে উঠে আসা বহুল আলোচিত সেই ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতারের খবর জানায় র্যাব। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতির পদে থাকা এই বিতর্কিত নেতাকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় যুবলীগের একই কমিটির সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে, যিনি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। গত রোববারই যুবলীগ থেকে এ দু’জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সম্রাটকে ঢাকায় আনার পর তাকে নিয়ে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে তার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। সেখানে আরো অনেক কিছুর সাথে ক্যাঙ্গারুর দুটি চামড়া পাওয়ায় সম্রাটকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর আগে চৌদ্দগ্রামের ওই বাড়িটিতে আরমানকে মদ্যপ অবস্থায় পাওয়া যাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। আরমানকে রোববার বিকেলের দিকে কুমিল্লার কারাগারে এবং রাতে সম্রাটকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ডিভিশনপ্রাপ্ত না হওয়ায় সম্রাটের স্থান হয়েছে কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে।
র্যাবের আলাদা আরো চারটি দল শান্তিনগরে সম্রাটের পারিবারিক বাসা, ধানমন্ডির বাসা, মহাখালীর ডিওএইচএসে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসা এবং মিরপুরে আরমানের বাসায় অভিযান চালায়। দিনভর এসব অভিযান চলার সময়ে সম্রাট র্যাবের হেফাজতে ছিলেন।
সম্রাটকে গ্রেফতারের পর র্যাবের মহাপরিচালক ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর দু-এক দিন পরই ঢাকা ছেড়ে আত্মগোপনে ছিলেন সম্রাট। এ ক্ষেত্রে তিনি এমন সব পন্থা অবলম্বন করেছিলেন, যাতে সহজে তাকে খুঁজে না পাওয়া যায়। আমরা যেসব জায়গায় ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি, সেসব জায়গা থেকে সম্রাটের নাম একাধিকবার এসেছে। আমাদের দীর্ঘ সময় লেগেছে তাকে লোকেট করতে।
দুপুর দেড়টায় কাকরাইলের ব্যস্ত সড়কের পাশে বহুতল ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টার ঘিরে ফেলেন র্যাব-পুলিশের সদস্যরা। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে র্যাবের একাধিক গাড়ি এসে থামে। একটি গাড়ি থেকে নামানো হয় সম্রাটকে। হাতকড়া পরানো অবস্থায় মাথায় হেলমেট ছিল তার। এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোওয়ার আলমকে সাথে নিয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করে র্যাব। টানা পাঁচ ঘণ্টা ভবনটির তিন ও সাততলায় তল্লাশি চালিয়ে টর্চার সেলের দুটি ইলেকট্রিক মেশিন, দুটি লাঠি, পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ একটি চায়নিজ পিস্তল, ১৯ বোতল বিদেশী মদ ও এক হাজার ১৬০ পিস ইয়াবা এবং দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।