ঢা কা র স ফ ল উ দ্যো ক্তা অ্যাড এজেন্সির চাহিদা বাড়ছে
- আহমেদ ইফতেখার
- ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
একটি ব্র্যান্ডকে সবার সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি পণ্যকে ভোক্তার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে মূল ভূমিকা পালন করে অ্যাড এজেন্সি। উন্নত দেশগুলোতে অ্যাড এজেন্সির চর্চা বহু আগে থেকে থাকলেও দেশে এর গুরুত্বটা খুব বেশি দিনের নয়। ঢাকার প্রতিটি ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানই নিজেদের ব্র্যান্ডিং ও সেলসের জন্য এখন অ্যাড এজেন্সিতেই নির্ভর। প্রতিষ্ঠিত অ্যাড এজেন্সির মধ্যে প্রচারণ কমিউনিকেশন লিমিটেড এখন অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহীন রহমানের সাথে কথা হয়েছে দেশের বর্তমান অ্যাড এজেন্সির বাজার, ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে।
প্রচারণের শুরুটা ছিল চার বন্ধু মিলে ২০০৮ সালে ১০০ স্কয়ার ফিট একটা রুমের মধ্যে। একটা সিআরটি মনিটরের পিসিতে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা থেকে যাত্রা শুরু করে দীর্ঘ ১১ বছরের পথচলায় দেশের অনেক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছে।
শাহীন রহমান জানান, প্রচারণ নিয়মিতই ইভেন্ট, অ্যাক্টিভেশন, টিভিসি, ওভিসি, প্রেস অ্যাড, ক্যাম্পেইন এবং ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ব্যস্ত। সামনেই রোজা ও ঈদ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো উৎসবকে ঘিরেই এজেন্সির কাজ থাকে তুঙ্গে। উল্লেখযোগ্য কাজের কথা যদি বলি, তা হলে এনার্জিপ্যাক গ্রুপের ইভেন্ট-অ্যাক্টিভেশনসহ বহু বড় বড় প্রজেক্ট করেছি আমরা। ইউএসএইড, সেভ দ্যা চিলড্রেনের বড় কিছু ইভেন্টের কাজ করেছি। সুপারস্টার গ্রুপের ইভেন্টগুলো নিয়মিতই করে থাকি। কনকর্ড গ্রুপের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজসহ বিভিন্ন প্রেস অ্যাডের কাজ করেছি। মেটাল গ্রুপের ব্র্যান্ডিংয়ের প্রায় সব ধরনের কাজ এবং ইভেন্টের কাজ করেছি। কোকাকোলা, লাভা, মেরিকো, সিএ বাংলাদেশ, বিমান বাংলাদেশ, এশিয়ান টাউন লিমিটেড, ইনসি সিমেন্ট, রূপপুর গ্রুপ, জ্যাক মোটরস, এডিসন গ্রুপ, কেএসআরএম, বঙ্গজ গ্রুপ, ডিলাক্স, এডেক্সেল, এএন্ডই, ম্যাক্স সিকিউরিটিজ লিমিটেড, রূপায়ণ গ্রুপ, বিআরবি ক্যাবলস, গোল্ডমার্ক, আইসিটি ডিভিশন, ইউনিলিভার, মাইক্রোসফটসহ অসংখ্য স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করেছি এবং করছি।
অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সির মূল কাজ সম্পর্কে শাহীন রহমান বলেন, যেকোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মূল ফোকাসের জায়গাটাই হচ্ছে অ্যাডভার্টাইজিং অথবা মার্কেটিং। এটিই যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের দুর্বল থাকে, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান কখনোই তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না। এজেন্সি মূলত একটি ব্র্যান্ডের যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য এবং পণ্যটি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে যা যা করণীয় তার সবই করে থাকে। আমরাও করে থাকি। এর মধ্যে যেমনÑ প্রেস অ্যাড, ডিজিটাল মার্কেটিং, ইভেন্ট, অ্যাক্টিভেশন, ক্যাম্পেইন, টিভিসি, ওভিসিসহ নানা ধরনের কার্যক্রম আছে। এর সবই একটা ব্র্যান্ডকে ভোক্তাদের কাছে যথোপযুক্তভাবে পৌঁছে দেয়। শুধু প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই নয়, ভোক্তাদের জন্যও বিষয়টি একইভাবে প্রয়োজনীয়। বাজারে প্রতিনিয়মিত হাজারো পণ্য বা সেবা আসছে। ভোক্তার প্রয়োজন অনুযায়ী সেই পণ্য বা সেবাগুলোকে তার দ্বারপ্রান্তে তথ্যটি পৌঁছে দেয়া হয়। এতে করে একটি ব্র্যান্ডের যতটা উপকার হয়, ভোক্তাও ঠিক ততটাই উপকৃত হন।
অ্যাড এজেন্সির ক্যারিয়ার সম্পর্কে শাহীন রহমান বলেন, এখনকার তরুণরা অ্যাড এজেন্সিতে কাজ করতে অধীর আগ্রহী। এর মূল কারণ হলোÑ বড় বড় ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করার সুযোগ থাকে এখানে, এতে করে ওই তরুণ-তরুণীর নিজ পোর্টফোলিওটা যথেষ্ট মজবুত হয়। আর একটি মজবুত পোর্টফোলিওই একজনের সুন্দর ক্যারিয়ার সাজায়। এ ছাড়া, অ্যাড এজেন্সিতে প্রচুর ক্রিয়েটিভ কাজের সুযোগ থাকে। প্রচুর বলা যাবে না, পুরোপুরিই ক্রিয়েটিভ কাজের সুযোগ থাকে। আর সৃজনশীল কাজ করতে কে না পছন্দ করে। যদি তার করা কোনো কাজ বাজারে খুব সাড়া ফেলে এটা তার ক্যারিয়ারের একটি বড় মাইলস্টোন হয়ে দাঁড়ায়। এখানের কাজের ধরনটা পুরোপুরিই স্বাধীন। করপোরেট অফিসের মতো সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে কিন্তু বাধ্যবাধকতা ততটা নেই। আর আমরা যারা এই এজেন্সি পরিচালনা করছি, তাদের ক্যারিয়ারটাও নিশ্চিতভাবে উজ্জ্বল।
এই ইন্ডাস্ট্রিতে স্কিলড ব্যক্তিদের প্রাধান্য বেশি। শুধু এখানেই নয়, সব ক্ষেত্রেই স্কিলডদের গুরুত্ব বেশি। তবুও এখানে যথেষ্ট পরিমাণে ফ্রেশারদের কাজের সুযোগ থাকে। ইভেন্ট, অ্যাক্টিভেশন, মার্কেটিং, সেলস, কপিরাইটিং, কনট্যান্ট রাইটিং, স্ক্রিপ্টরাইটিংসহ ক্রিয়েটিভেও ফ্রেশারদের যথেষ্ট সুযোগ আছে। আর বাজারে এজেন্সির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ফ্রেশার এবং অভিজ্ঞদের কাজের সুযোগ এবং পরিধি যথেষ্ট বড়। সামনে এটা আরো বৃহৎ হবে।