বর্ষার আগেই জলাবদ্ধতার শঙ্কা
- ১২ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
প্রতি বছরই ডিএসসিসি ও ওয়াসা জলাবদ্ধতা নিরসনে বিপুল অর্থ ব্যয় করলেও সমস্যাটির নিরসন হচ্ছে না। ফলে এবার বর্ষাতেও ঢাকার অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। শান্তিনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দূর করতে ডিএসসিসি প্রতি বছরই বড় অঙ্কের টাকা খরচ করছে। গত ২০১৫ সাল থেকে ব্যাপকভাবে এই প্রক্রিয়া চলছে। ডিএসসিসি এই সময়ে খরচ করছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। আর ওয়াসা গত তিন বছরে এই খাতে খরচ করছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। তবে জলাবদ্ধতা নিরসন হয়নি।
আসন্ন বর্ষা মওসুমে ঢাকায় জলাবদ্ধতা সহনীয় মাত্রায় রাখতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে সেগুনবাগিচা বক্স কালভার্ট ও গভীর নর্দমা পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছে ঢাকা ওয়াসা। এখন ফকিরাপুল এলাকায় রাতেও কাজ চলছে।
দুই সিটি করপোরেশনও জলাবদ্ধতা রোধে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মতে, এবারো ঢাকার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা থাকবে। কারণ ভারী বৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে পানি ধারণ করার জন্য শহরে উপযুক্ত জলাধার নেই। আর ভারী বৃষ্টির পানি টেনে নেয়ার পাম্পগুলোর ক্ষমতাও সীমিত।
ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের সূত্রমতে, ফেব্রুয়ারি থেকে আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা রোধের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ভারী বৃষ্টি হলে মতিঝিল ও আশপাশে এবং মৌচাক ও আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেছনে বিশাল জায়গাজুড়ে জলাধার ছিল। বৃষ্টির পানি সেখানে গিয়ে জমা হতো। পরে বিভিন্ন খাল দিয়ে সেই পানি পৌঁছাত বালু নদে। এখন এসব খাল ভরাট ও দখল হয়ে গেছে। পরিষ্কার করলেও অল্প দিনেই আবার আবর্জনায় ভরে যায়। ফলে ভারী বৃষ্টির পানি বিভিন্ন সড়কেই আটকে থাকে।
ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান বলেন, এ এলাকার পানি যাওয়ার একটিই পথ (আউটলেট) আছে জনপদে। সেখানে ওয়াসার তিনটি পাম্প আছে। এগুলোর পানি টানার সার্বিক ক্ষমতা প্রতি ঘণ্টায় ৫৪ হাজার কিউবিক মিটার, কিন্তু প্রয়োজন এক লাখ কিউবিক মিটারের বেশি। ফলে ৬০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে মতিঝিলসহ আশপাশের পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা হবেই।
গত বছর মেগা প্রকল্পের আওতায় পুরানা পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল, শান্তিনগর, রাজারবাগ, মৌচাক এবং মালিবাগসহ আশপাশ এলাকায় ৭০ কোটি টাকা খরচ করে ১২ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণ করেছে ডিএসসিসি। এ ছাড়া নর্দমা পরিষ্কারের জন্য ১৮ কোটি টাকায় দু’টি যন্ত্রও কেনা হয়। এর আগে ২০১৫ থেকে দুই বছরে বিভিন্ন প্রকল্পে খরচ করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। ঢাকা ওয়াসাও গত তিন বছরে সরকার থেকে ৮০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ নিয়ে বক্স কালভার্ট ও নর্দমা পরিষ্কার ও খাল খননে খরচ করে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কিছু এলাকায় এবার জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সমস্যাটি পুরোপুরি নিরসন হবে না।